আজ ২৩ জুন। আওয়ামী লীগের ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে
নেতৃত্বদানকারী এই দলটি ৬৫ বছরের মাথায় এসে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে
ক্ষমতা ধরে রেখে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ অথচ এই আওয়ামী
লীগই পাঁচ বছর আগে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের মধ্য
দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল৷
একই সঙ্গে পরিণত হয়েছে অনেকটাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলে। ঐতিহ্যবাহী এই দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দলীয় কর্মসূচি আবর্তিত হচ্ছে মূলত প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে। তিনি ৩৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পদে রয়েছেন৷
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনে অবস্থিত রোজ গার্ডেনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সমর্থক নেতা-কর্মীদের এক বৈঠকে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগ। তখন দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং শামসুল হক হন সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পান শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তী সময়ে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক ও গণমানুষের দল হিসেবে বিস্তার ঘটে আওয়ামী লীগের। সত্তরের নির্বাচনে বাঙালি জাতি আওয়ামী লীগের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় দেয়। এই দলটির নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে পরিচালিত হয় মুক্তিযুদ্ধ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বিপর্যয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ৷ ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর প্রতিবার সম্মেলনেই তিনি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
১৯৮৭ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রথম ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ৷ ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করে আবার ক্ষমতায় আসে দলটি। তখন দলটিকে ঘিরে মানুষের মধ্যে সুশাসনের ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল৷
পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের রায়ের কথা বলে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা ছাড়াই গত ৫ জানুয়ারি কার্যত একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীসহ কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চর্চা খুব একটা নেই। আত্মসমালোচনা বা সরকারের কার্যক্রমের গঠনমূলক সমালোচনার কথা কেউ ভাবতে পারেন না৷ দলীয় নেতাদের যে একটা অংশ বক্তৃতা-বিবৃতিতে সক্রিয়, তাঁদের মূল উদ্দেশ্য দলীয় প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ। তাঁদের বক্তব্য মূলত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানকে কেন্দ্র করে।
আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত দুই মাসে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যনির্বাহী সংসদের দুটি বৈঠক হয়েছে। একটি বৈঠকে দলের সাংসদদেরও ডাকা হয়। কিন্তু ওই সব বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়নি। এমনকি নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুন, ফেনীতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে পুড়িয়ে হত্যা ও লক্ষ্মীপুরে খুনোখুনির বিষয় আলোচনায় স্থান পায়নি। কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, নেতাদের প্রায় সবাই দলীয় প্রধানের মনোভাব বুঝে বক্তব্য দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সেনাশাসন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও মৌলবাদী রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চাটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয়নি। তিনি মনে করেন, গণতান্ত্রিক চর্চা এখনো যা আছে, তা আওয়ামী লীগেই বিদ্যমান।
আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন হলেও ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের চর্চা অনেক দিন ধরেই নেই৷ দলীয় সভানেত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছাতেই নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে এক বছর আগে। তাতে দলীয় প্রধানকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
এ ছাড়া সারা দেশে ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১৩টির হালনাগাদ কমিটি আছে। বাকিগুলোর কমিটি আটকে আছে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে। নারায়ণগঞ্জের বিতর্কিত নেতা শামীম ওসমানের অবস্থান দলে কী হবে, সেটা নিয়ে আটকে আছে ওই জেলার কমিটি।
সারা দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠনের কথা ছিল। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে দলের একটি সাংগঠনিক বৈঠকে রাজশাহী, খুলনা মহানগরসহ সাতটি জেলা কমিটির সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে মুিন্সগঞ্জের সম্মেলন হয়েছে গত শনিবার। তাতে পুরোনো নেতৃত্বই রয়ে গেছে। সাংগঠনিক কার্যক্রম বলতে এখন দিবসকেন্দ্রিক কর্মসূচিতেই সীমাবদ্ধ।
জানতে চাইলে প্রবীণ রাজনীতিক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগের মূল ভিত্তি হচ্ছে জনসম্পৃক্ততা ও গণমুখিতা। মাছ যেমন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনি জনগণ ছাড়া আওয়ামী লীগেরও অস্তিত্ব বিলীন। তিনি আরও বলেন, এখন সময় হচ্ছে সংবিধান রক্ষা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জনগণকে সম্পৃক্ত করার।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাতটায় ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হবে। সোয়া সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পায়রা ও বেলুন ওড়ানো হবে। বেলা তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত গণশোভাযাত্রা। ২৮ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে নেতা, কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ prothom alo
একই সঙ্গে পরিণত হয়েছে অনেকটাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলে। ঐতিহ্যবাহী এই দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দলীয় কর্মসূচি আবর্তিত হচ্ছে মূলত প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে। তিনি ৩৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পদে রয়েছেন৷
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনে অবস্থিত রোজ গার্ডেনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সমর্থক নেতা-কর্মীদের এক বৈঠকে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগ। তখন দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং শামসুল হক হন সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পান শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তী সময়ে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক ও গণমানুষের দল হিসেবে বিস্তার ঘটে আওয়ামী লীগের। সত্তরের নির্বাচনে বাঙালি জাতি আওয়ামী লীগের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় দেয়। এই দলটির নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে পরিচালিত হয় মুক্তিযুদ্ধ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বিপর্যয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ৷ ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর প্রতিবার সম্মেলনেই তিনি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
১৯৮৭ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রথম ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ৷ ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করে আবার ক্ষমতায় আসে দলটি। তখন দলটিকে ঘিরে মানুষের মধ্যে সুশাসনের ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল৷
পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের রায়ের কথা বলে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা ছাড়াই গত ৫ জানুয়ারি কার্যত একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীসহ কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চর্চা খুব একটা নেই। আত্মসমালোচনা বা সরকারের কার্যক্রমের গঠনমূলক সমালোচনার কথা কেউ ভাবতে পারেন না৷ দলীয় নেতাদের যে একটা অংশ বক্তৃতা-বিবৃতিতে সক্রিয়, তাঁদের মূল উদ্দেশ্য দলীয় প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ। তাঁদের বক্তব্য মূলত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানকে কেন্দ্র করে।
আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত দুই মাসে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যনির্বাহী সংসদের দুটি বৈঠক হয়েছে। একটি বৈঠকে দলের সাংসদদেরও ডাকা হয়। কিন্তু ওই সব বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়নি। এমনকি নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুন, ফেনীতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে পুড়িয়ে হত্যা ও লক্ষ্মীপুরে খুনোখুনির বিষয় আলোচনায় স্থান পায়নি। কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, নেতাদের প্রায় সবাই দলীয় প্রধানের মনোভাব বুঝে বক্তব্য দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সেনাশাসন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও মৌলবাদী রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চাটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয়নি। তিনি মনে করেন, গণতান্ত্রিক চর্চা এখনো যা আছে, তা আওয়ামী লীগেই বিদ্যমান।
আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন হলেও ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের চর্চা অনেক দিন ধরেই নেই৷ দলীয় সভানেত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছাতেই নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে এক বছর আগে। তাতে দলীয় প্রধানকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
এ ছাড়া সারা দেশে ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১৩টির হালনাগাদ কমিটি আছে। বাকিগুলোর কমিটি আটকে আছে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে। নারায়ণগঞ্জের বিতর্কিত নেতা শামীম ওসমানের অবস্থান দলে কী হবে, সেটা নিয়ে আটকে আছে ওই জেলার কমিটি।
সারা দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠনের কথা ছিল। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে দলের একটি সাংগঠনিক বৈঠকে রাজশাহী, খুলনা মহানগরসহ সাতটি জেলা কমিটির সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে মুিন্সগঞ্জের সম্মেলন হয়েছে গত শনিবার। তাতে পুরোনো নেতৃত্বই রয়ে গেছে। সাংগঠনিক কার্যক্রম বলতে এখন দিবসকেন্দ্রিক কর্মসূচিতেই সীমাবদ্ধ।
জানতে চাইলে প্রবীণ রাজনীতিক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগের মূল ভিত্তি হচ্ছে জনসম্পৃক্ততা ও গণমুখিতা। মাছ যেমন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনি জনগণ ছাড়া আওয়ামী লীগেরও অস্তিত্ব বিলীন। তিনি আরও বলেন, এখন সময় হচ্ছে সংবিধান রক্ষা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জনগণকে সম্পৃক্ত করার।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাতটায় ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হবে। সোয়া সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পায়রা ও বেলুন ওড়ানো হবে। বেলা তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত গণশোভাযাত্রা। ২৮ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে নেতা, কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ prothom alo
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন