শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০১৫

لْ إِنَّ رَبِّي يَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَّامُ الْغُيُوبِ ﴿٣٤: ٤٨﴾

আমাদের প্রিয় রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন এ নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে দুটি দল রয়েছে যারা এ বিষয়টিকে একটি বিতর্কিত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন একটি দলের দাবী রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন এবং অন্য দলের দাবী রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন না প্রথম বিষয় হলো রাসূল (সাঃ) গায়েব জানুক আর নাই জানুক তাঁর প্রতি আমাদের সম্মান, ভালবাসা আর শ্রদ্ধা সামান্যটুকুও কমবে না দ্বিতীয় বিষয় হলো রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন কি না সেটি জানা কোন মুসলমানের জন্য ফরয, ওয়াজিব বা সুন্নাত নয় কেয়ামতের দিন কোন মুসলিমকে এ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে না আর গুরুত্বহীন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা বা বাড়াবাড়ি করা ইসলামে বৈধও নয় যখন কোন বিষয়ে বিতর্ক হবে তখন কোরআন ও সুন্নার দিকে ফিরে যাওয়াটা ঈমানদার ব্যক্তিদের কাজ আল্লাহ বলেন- إِنَّهُ لَقَوْلٌ فَصْلٌ ﴿٨٦: ١٣﴾নিশ্চয় কোরআন সত্য-মিথ্যার ফয়সালা(At-Taariq: 13) তাই বিষয়টি নিয়ে কোরআনে কী নির্দেশনা রয়েছে তা আমরা একটু দেখার চেষ্টা করি

 
গায়েব সম্পর্কে পবিত্র ক্বোরআন যা বলেঃ
(1) আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব (Hud: 31) 
وَلَا أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلَا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلَا أَقُولُ إِنِّي مَلَكٌ وَلَا أَقُولُ لِلَّذِينَ تَزْدَرِي أَعْيُنُكُمْ لَن يُؤْتِيَهُمُ اللَّهُ خَيْرًا ۖ اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا فِي أَنفُسِهِمْ ۖ إِنِّي إِذًا لَّمِنَ الظَّالِمِينَ ﴿١١: ٣١﴾

(2) বস্তুতঃ তারা বলে, তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন? বলে দাও গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন আমি তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম (Yunus: 20) 
وَيَقُولُونَ لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن رَّبِّهِ ۖ فَقُلْ إِنَّمَا الْغَيْبُ لِلَّهِ فَانتَظِرُوا إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ ﴿١٠: ٢٠﴾
 
(3) আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য (Al-A'raaf: 188) 
قُل لَّا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۚ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ ۚ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ ﴿٧: ١٨٨﴾

(4) বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে (An-Naml: 65) 
قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ ۚ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ ﴿٢٧: ٦٥﴾

(5) এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন করছি ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল, সন্দেহ নেই (Hud: 49) 
تِلْكَ مِنْ أَنبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهَا إِلَيْكَ ۖ مَا كُنتَ تَعْلَمُهَا أَنتَ وَلَا قَوْمُكَ مِن قَبْلِ هَٰذَا ۖ فَاصْبِرْ ۖ إِنَّ الْعَاقِبَةَ لِلْمُتَّقِينَ ﴿١١: ٤٩﴾ 

(6) না তাদের কাছে গায়বের খবর আছে? অতঃপর তারা তা লিপিবদ্ধ করে (Al-Qalam: 47) 
أَمْ عِندَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ ﴿٦٨: ٤٧﴾ 

(7) বলুন, আমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ করেছেন তিনি আলেমুল গায়ব (Saba: 48) 
قُلْ إِنَّ رَبِّي يَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَّامُ الْغُيُوبِ ﴿٣٤: ٤٨﴾

(8) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না (Sura Jinn)
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا [٧٢:٢٦
(9) তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না স্থলে জলে যা আছে, তিনিই জানেন কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে (Al-An'aam: 59)
وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا هُوَ ۚ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ ۚ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَا حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الْأَرْضِ وَلَا رَطْبٍ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
(10) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না (Al-Jinn: 26)
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا
(11) যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে? তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে মহাজ্ঞানী (Al-Maaida: 109)
يَوْمَ يَجْمَعُ اللَّهُ الرُّسُلَ فَيَقُولُ مَاذَا أُجِبْتُمْ ۖ قَالُوا لَا عِلْمَ لَنَا ۖ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ
(12) যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না (Saba: 14)
فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ الْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَىٰ مَوْتِهِ إِلَّا دَابَّةُ الْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنسَأَتَهُ ۖ فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتِ الْجِنُّ أَن لَّوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ الْغَيْبَ مَا لَبِثُوا فِي الْعَذَابِ الْمُهِينِ
(13) আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা আমি তো শুধু ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে আপনি বলে দিনঃ অন্ধ চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? (Al-An'aam: 50)
قُل لَّا أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلَا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلَا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰ إِلَيَّ ۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الْأَعْمَىٰ وَالْبَصِيرُ ۚ أَفَلَا تَتَفَكَّرُونَ

পবিত্র ক্বোরআন আল্লাহকেই গায়েব বিষয়ে জানার সাক্ষ্য দেয়ঃ
উপরে বর্ণিত কোরআনের আয়াতগুলো দ্বারা বুঝা যায় রাসুল (সাঃ) গায়েব জানতেন না সবগুলো আয়াতে স্পষ্টভাবে ঘোষনা করা হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কেউ গায়েব জানেন না এবার নিচের আয়াতগুলো দেখি নিচের আয়াতগুলো একমাত্র আল্লাহকেই عَالِمُ الْغَيْبِ বা গায়েবজানার মালিক হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছে
(1) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না (Al-Jinn: 26)
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا
(2) তিনি দৃশ্য অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময় (At-Taghaabun: 18)
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
(3) তিনিই দৃশ্য অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু (As-Sajda: 6)
ذَٰلِكَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ
(4) তিনি দৃশ্য অদৃশ্যের জ্ঞানী তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে (Al-Muminoon: 92)
عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ
(5) আল্লাহ নভোমন্ডল ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন (Al-Hujuraat: 18)
إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
(6) আল্লাহ আসমান যমীনের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত (Faatir: 38)
إِنَّ اللَّهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
(7) তিনিই আল্লাহ তাআলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা (Al-Hashr: 22)
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ
(8) বলুন, হে আল্লাহ আসমান যমীনের স্রষ্টা, দৃশ্য অদৃশ্যের জ্ঞানী, আপনিই আপনার বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন, যে বিষয়ে তারা মত বিরোধ করত (Az-Zumar: 46)
قُلِ اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِي مَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
(9) যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে? তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে মহাজ্ঞানী (Al-Maaida: 109)
يَوْمَ يَجْمَعُ اللَّهُ الرُّسُلَ فَيَقُولُ مَاذَا أُجِبْتُمْ ۖ قَالُوا لَا عِلْمَ لَنَا ۖ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ
(10) বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে (Al-Jumu'a: 8)
قُلْ إِنَّ الْمَوْتَ الَّذِي تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُ مُلَاقِيكُمْ ۖ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
(11) তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন যেদিন তিনি বলবেনঃ হয়ে যা, অতঃপর হয়ে যাবে তাঁর কথা সত্য যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার করা হবে, সেদিন তাঁরই আধিপত্য হবে তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ বিষয়ে জ্ঞাত তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ (Al-An'aam: 73)
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ ۖ وَيَوْمَ يَقُولُ كُن فَيَكُونُ ۚ قَوْلُهُ الْحَقُّ ۚ وَلَهُ الْمُلْكُ يَوْمَ يُنفَخُ فِي الصُّورِ ۚ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۚ وَهُوَ الْحَكِيمُ الْخَبِيرُ ﴿٦: ٧٣﴾
(12) বলুনঃ তারা কতকাল অবস্থান করেছে, তা আল্লাহই ভাল জানেন নভোমন্ডল ভুমন্ডলের অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই কাছে রয়েছে তিনি কত চমৎকার দেখেন শোনেন তিনি ব্যতীত তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেন না (Al-Kahf: 26)
قُلِ اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا لَبِثُوا ۖ لَهُ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ أَبْصِرْ بِهِ وَأَسْمِعْ ۚ مَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
(13) কাফেররা বলে আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না বলুন কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই আসবে তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত নভোমন্ডলে ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সমস্তই আছে সুস্পষ্ট কিতাবে (Sura Saba: 3)
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَأْتِينَا السَّاعَةُ ۖ قُلْ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتَأْتِيَنَّكُمْ عَالِمِ الْغَيْبِ ۖ لَا يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَلَا أَصْغَرُ مِن ذَٰلِكَ وَلَا أَكْبَرُ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
(14) যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না (Saba: 14)
فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ الْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَىٰ مَوْتِهِ إِلَّا دَابَّةُ الْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنسَأَتَهُ ۖ فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتِ الْجِنُّ أَن لَّوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ الْغَيْبَ مَا لَبِثُوا فِي الْعَذَابِ الْمُهِينِ
(15) আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা আমি তো শুধু ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে আপনি বলে দিনঃ অন্ধ চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? (Al-An'aam: 50)
قُل لَّا أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلَا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلَا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰ إِلَيَّ ۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الْأَعْمَىٰ وَالْبَصِيرُ ۚ أَفَلَا تَتَفَكَّرُونَ ﴿٦: ٥٠﴾
(16) তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না স্থলে জলে যা আছে, তিনিই জানেন কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে (Al-An'aam: 59)
وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا هُوَ ۚ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ ۚ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَا حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الْأَرْضِ وَلَا رَطْبٍ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ ﴿٦: ٥٩﴾
(17) যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে আমার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত কর? ঈসা বলবেন; আপনি পবিত্র! আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা জানেন এবং আমি জানি না যা আপনার মনে আছে নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত (Al-Maaida: 116)
وَإِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ أَأَنتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ اتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيْنِ مِن دُونِ اللَّهِ ۖ قَالَ سُبْحَانَكَ مَا يَكُونُ لِي أَنْ أَقُولَ مَا لَيْسَ لِي بِحَقٍّ ۚ إِن كُنتُ قُلْتُهُ فَقَدْ عَلِمْتَهُ ۚ تَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِي وَلَا أَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِكَ ۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ
(18) আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও যমীনের গোপন তথ্য; আর সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে; অতএব, তাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁর উপর ভরসা রাখ, আর তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তু বে-খবর নন (Sura Hud:123)
وَلِلَّهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِلَيْهِ يُرْجَعُ الْأَمْرُ كُلُّهُ فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ ۚ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ


মতভেদকারীদের ব্যাপারে পবিত্র ক্বোরআন যা বলেঃ
উপরের আয়াতগুলো দ্বারা আল্লাহ তায়ালা গায়েব সম্পর্কে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যাতে তার বান্দাদের কোন সন্দেহ না থাকে কিন্তু কোরআনের স্পষ্ট নির্দেশনা পেয়েও যারা তা অবিশ্বাস করে, এর বিপক্ষে অন্য প্রমান খোঁজ করে এবং মানুষের মাঝে বিভেধ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তাদের জন্য কোরআন কি বলে সেটা একটু দেখি
(1) আরও দিয়েছিলাম তাদেরকে ধর্মের সুস্পষ্ট প্রমাণাদিঅতঃপর তারা জ্ঞান লাভ করার পর শুধু পারস্পরিক জেদের বশবর্তী হয়ে মতভেদ সৃষ্টি করেছেতারা যে বিষয়ে মতভেদ করত, আপনার পালনকর্তা কেয়ামতের দিন তার ফয়সালা করে দেবেন। (Al-Jaathiya: 17)
وَآتَيْنَاهُم بَيِّنَاتٍ مِّنَ الْأَمْرِ ۖ فَمَا اخْتَلَفُوا إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ ﴿٤٥: ١٧﴾
(2) অতঃপর তাদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ সৃষ্টি করলসুতরাং যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের দুর্ভোগ। (Az-Zukhruf: 65)
فَاخْتَلَفَ الْأَحْزَابُ مِن بَيْنِهِمْ ۖ فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْ عَذَابِ يَوْمٍ أَلِيمٍ ﴿٤٣: ٦٥﴾
(3) তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর, তার ফয়সালা আল্লাহর কাছে সোপর্দইনিই আল্লাহ, আমার পালনকর্তা, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী হই। (Ash-Shura: 10)
وَمَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ مِن شَيْءٍ فَحُكْمُهُ إِلَى اللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبِّي عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ ﴿٤٢: ١٠﴾
(4) আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর তাতে মতভেদ সৃষ্টি হয়আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের মধ্যে ফয়সালা হয়ে যেততারা কোরআন সমন্ধে এক অস্বস্তিকর সন্দেহে লিপ্ত। (Fussilat: 45)
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ فَاخْتُلِفَ فِيهِ ۗ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ ۚ وَإِنَّهُمْ لَفِي شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ ﴿٤١: ٤٥﴾
(5) তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা ব্যতীত সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেনআর তোমার আল্লাহর কথাই পূর্ণ হল যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বারা একযোগে ভর্তি করব। (Hud: 119) 
إِلَّا مَن رَّحِمَ رَبُّكَ ۚ وَلِذَٰلِكَ خَلَقَهُمْ ۗ وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ ﴿١١: ١١٩﴾
(6) সকল মানুষ একই জাতি সত্তার অন্তর্ভুক্ত ছিলঅতঃপর আল্লাহ তাআলা পয়গম্বর পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকরী হিসাবেআর তাঁদের সাথে অবর্তীণ করলেন সত্য কিতাব, যাতে মানুষের মাঝে বিতর্কমূলক বিষয়ে মীমাংসা করতে পারেনবস্তুতঃ কিতাবের ব্যাপারে অন্য কেউ মতভেদ করেনি; কিন্তু পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর নিজেদের পারস্পরিক জেদবশতঃ তারাই করেছে, যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিলঅতঃপর আল্লাহ ঈমানদারদেরকে হেদায়েত করেছেন সেই সত্য বিষয়ে, যে ব্যাপারে তারা মতভেদ লিপ্ত হয়েছিলআল্লাহ যাকে ইচ্ছা, সরল পথ বাতলে দেন। (Al-Baqara: 213) 
كَانَ النَّاسُ أُمَّةً وَاحِدَةً فَبَعَثَ اللَّهُ النَّبِيِّينَ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ فِيمَا اخْتَلَفُوا فِيهِ ۚ وَمَا اخْتَلَفَ فِيهِ إِلَّا الَّذِينَ أُوتُوهُ مِن بَعْدِ مَا جَاءَتْهُمُ الْبَيِّنَاتُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۖ فَهَدَى اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا لِمَا اخْتَلَفُوا فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِهِ ۗ وَاللَّهُ يَهْدِي مَن يَشَاءُ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ ﴿٢: ٢١٣﴾
(7) তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরই তারা পারস্পরিক বিভেদের কারণে মতভেদ করেছেযদি আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকত, তবে তাদের ফয়সালা হয়ে যেততাদের পর যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে, তারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত রয়েছে। (Ash-Shura: 14) 
وَمَا تَفَرَّقُوا إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۚ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى لَّقُضِيَ بَيْنَهُمْ ۚ وَإِنَّ الَّذِينَ أُورِثُوا الْكِتَابَ مِن بَعْدِهِمْ لَفِي شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ ﴿٤٢: ١٤﴾
(8) যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেপ্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত। (Ar-Room: 32)
مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا ۖ كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ ﴿٣٠: ٣٢﴾
(9) আর আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলেরতাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও নাযদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবেআর তোমরা ধৈর্য্যধারণ করনিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে
وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ ۖ وَاصْبِرُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ [٨:٤٦]
(10) ঈসা যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ আগমন করল, তখন বলল, আমি তোমাদের কাছে প্রজ্ঞা নিয়ে এসেছি এবং তোমরা যে, কোন কোন বিষয়ে মতভেদ করছ তা ব্যক্ত করার জন্যে এসেছি, অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার কথা মান। (Az-Zukhruf: 63)
وَلَمَّا جَاءَ عِيسَىٰ بِالْبَيِّنَاتِ قَالَ قَدْ جِئْتُكُم بِالْحِكْمَةِ وَلِأُبَيِّنَ لَكُم بَعْضَ الَّذِي تَخْتَلِفُونَ فِيهِ ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ ﴿٤٣: ٦٣﴾
(11)  আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোরআনকে বিশ্বাস করবে এবং কেউ কেউ বিশ্বাস করবে নাবস্তুতঃ তোমার পরওয়ারদেগার যথার্থই জানেন দুরাচারদিগকে। (Yunus: 40)
وَمِنْهُم مَّن يُؤْمِنُ بِهِ وَمِنْهُم مَّن لَّا يُؤْمِنُ بِهِ ۚ وَرَبُّكَ أَعْلَمُ بِالْمُفْسِدِينَ ﴿١٠: ٤٠﴾
(12)  যারা অপরাধী, তারা বিশ্বাসীদেরকে উপহাস করত। (Al-Mutaffifin: 29)
إِنَّ الَّذِينَ أَجْرَمُوا كَانُوا مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا يَضْحَكُونَ ﴿٨٣: ٢٩﴾
(13) আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয়। (Yusuf: 103)
وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ ﴿١٢: ١٠٣﴾
(14) নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে নাআল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেনআর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। (Sura Bakara: 6,7)
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ [٢:٦]خَتَمَ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ وَعَلَىٰ سَمْعِهِمْ ۖ وَعَلَىٰ أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ [٢:٧]
(15) নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেইতাদের ব্যাপার আল্লাহ তা'আয়ালার নিকট সমর্পিতঅতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে। (Sura An’aam: 159)
إِنَّ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِي شَيْءٍ ۚ إِنَّمَا أَمْرُهُمْ إِلَى اللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُوا يَفْعَلُونَ [٦:١٥٩]
(16) তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা ব্যতীত সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেনআর তোমার আল্লাহর কথাই পূর্ণ হল যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বারা একযোগে ভর্তি করব  (Sura Hud: 119)
إِلَّا مَن رَّحِمَ رَبُّكَ ۚ وَلِذَٰلِكَ خَلَقَهُمْ ۗ وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ [١١:١١٩]
(17) আল্লাহর দ্বীন মেনে নেয়ার পর যারা সে সম্পর্কে বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়, তাদের বিতর্ক তাদের পালনকর্তার কাছে বাতিল, তাদের প্রতি আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব। (Ash-Shura: 16)   
وَالَّذِينَ يُحَاجُّونَ فِي اللَّهِ مِن بَعْدِ مَا اسْتُجِيبَ لَهُ حُجَّتُهُمْ دَاحِضَةٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ ﴿٤٢: ١٦﴾   
(18) আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা কোথায় ফিরছে? (Ghaafir: 69)   
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ أَنَّىٰ يُصْرَفُونَ ﴿٤٠: ٦٩﴾
(19) যারা নিজেদের কাছে আগত কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের একজন আল্লাহ ও মুমিনদের কাছে খুবই অসন্তোষজনকএমনিভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী-স্বৈরাচারী ব্যক্তির অন্তরে মোহর এঁটে দেন (Ghaafir: 35)
الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ ۖ كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ وَعِندَ الَّذِينَ آمَنُوا ۚ كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ قَلْبِ مُتَكَبِّرٍ جَبَّارٍ ﴿٤٠: ٣٥﴾
(20) নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের কাছে আগত কোন দলীল ব্যতিরেকে, তাদের অন্তরে আছে কেবল আত্নম্ভরিতা, যা অর্জনে তারা সফল হবে নাঅতএব, আপনি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করুননিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন (Ghaafir: 56)
إِنَّ الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ ۙ إِن فِي صُدُورِهِمْ إِلَّا كِبْرٌ مَّا هُم بِبَالِغِيهِ ۚ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ ﴿٤٠: ٥٦﴾
 উপরের আয়াতগুলো দ্বারা বুঝা যায় অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে তর্ক করা আল্লাহর নির্দেশের পরিপন্থী।
ওহী আর গায়েবঃ
কোরআনের বাণীগুলো থেকে এটা স্পষ্ট যে রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন না রাসূল (সাঃ) নবুয়্যাতের আগে মক্কাবাসীর নিকট খুব প্রিয় এবং বিশ্বস্থ একজন ব্যক্তি হিসেবে সুনাম থাকলেও নবুয়্যাতের পর অধিকাংশ লোক মুহাম্মদ (সাঃ) কে ঘৃণা করতে শুরু করে অনেকে তাঁকে হত্যা করার চেষ্টাও করেছিল এ সব কারণে মুহাম্মদ (সাঃ) কে প্রায় সময় বিপদের মোকাবেলা করতে হত কিন্তু তাঁকে নিয়ে কে কী ষড়যন্ত্র করছে তা তিনি জানবেন কি করে? আল্লাহই ছিলেন তাঁর সাহায্যকারী কাফেরদের সব ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা আল্লাহপাক হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে তাঁর প্রিয় রাসূল (সাঃ) কে জানিয়ে দিতেন যেমন ইসলামের প্রথম দিকের যুদ্ধগুলোতে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল কাফেরদের তুলনায় অনেক কম তাই মুসলিমদের মনে একটা ভয় থেকেই যেত যে তাঁরা এতগুলো কাফেরদের বিরুদ্ধে জিতবে কিনা এ অবস্থায় আল্লাহপাক জিব্রাইলকে দিয়ে জয়ের সুসংবাদ জানিয়ে দিতেন তাঁর প্রিয় হাবিবকে যাতে মুসলিমদের মনে সাহস আসে সূরা আনফালে তার সম্পর্কে আয়াত রয়েছে নিম্নরূপঃ
হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দুশর মোকাবেলায় আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন এখন বোঝা হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্য দূর্বলতা রয়েছে কাজেই তোমাদের মধ্যে যদি দৃঢ়চিত্ত একশ লোক বিদ্যমান থাকে, তবে জয়ী হবে দুশর উপর আর যদি তোমরা এক হাজার হও তবে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জয়ী হবে দুহাজারের উপর আর আল্লাহ রয়েছেন দৃঢ়চিত্ত লোকদের সাথে (Sura Anfaal: 65,66)
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ ۚ إِن يَكُن مِّنكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ وَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ يَغْلِبُوا أَلْفًا مِّنَ الَّذِينَ كَفَرُوا بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ [٨:٦٥]
الْآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًا ۚ فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ وَإِن يَكُن مِّنكُمْ أَلْفٌ يَغْلِبُوا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ [٨:٦٦]
এছাড়া সূরা ইউসূফের শেষের দিকে ১০২ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেন- এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল এবং চক্রান্ত করছিল (Yusuf: 102)
ذَٰلِكَ مِنْ أَنبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۖ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوا أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ ﴿١٢: ١٠٢﴾
মক্কার ইহুদীরা রাসূল (সাঃ) কে বিপদে ফেলার জন্য অনেক জটিল জটিল প্রশ্ন করতো। তারা একবার প্রশ্ন করেছিল- আপনি যদি সত্যিই আল্লাহর নবী হন, তবে বলুন ইয়াকুব পরিবার সিরিয়া থেকে মিসরে কেন স্থানান্তরিত হয়েছিল এবং ইউসুফ (সাঃ) এর ঘটনা কি ছিল? এসব ঘটনা তাওরাতে বর্ণিত ছিল আর ইহুদীরা ভাবতো মুহাম্মদ (সাঃ) নিরক্ষর তাই তাওরাত থেকে এসব জিনীস জেনে নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না কিন্তু আল্লাহ পাক ওহীর মাধ্যমে ইউসুফ (আঃ) তার পরিবার সম্পর্কে এত সুন্দর এবং বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন যে, ইহুদীরা আশ্চর্য হয়ে গেল প্রকৃতপক্ষে রাসূল (সাঃ) এর কাছে হযরত ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনা ছিল হাজারো বছরের পুরনো যা একমাত্র ওহী ছাড়া কোন ক্ষমতা বলেই জানা সম্ভব ছিল না তাই সূরার শেষে আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবিবকে সম্বোধন করে বলতেছেন –“ أَنبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ   অর্থাৎ এসব কাহিনী গায়েবের অন্তর্ভুক্ত যা আমি আপনাকে দিয়ে থাকি যখন ইউসুফেকে তাঁর ভাইয়েরা কূপে নিক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত বা কলাকৌশল করছিল তখন আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না এছাড়া পবিত্র ক্বোরআন আরো বলছে-
এ হলো গায়েবী সংবাদ, যা আমি আপনাকে পাঠিয়ে থাকিআর আপনি তো তাদের কাছে ছিলেন না, যখন প্রতিযোগিতা করছিল যে, কে প্রতিপালন করবে মারইয়ামকে এবং আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা ঝগড়া করছিলো (Aali Imraan: 44)
ذَٰلِكَ مِنْ أَنبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۚ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يُلْقُونَ أَقْلَامَهُمْ أَيُّهُمْ يَكْفُلُ مَرْيَمَ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يَخْتَصِمُونَ ﴿٣: ٤٤﴾
এরকম হাজারো ঘটনা আছে যেখানে আল্লাহ তায়ালা ওহীর মাধ্যমে তাঁর প্রিয় হাবিবকে সাহায্য করেছেন এসব বিষয় দুনিয়ার কেউ জানত না, জানত শুধু মুহাম্মদ (সাঃ) একজন মূলত প্রিয় রাসূল (সাঃ) যে আল্লাহর নবী তা কফেরদের বিশ্বাস করানোর জন্য এটা ছিলো আল্লাহ তায়ালার কৌশল এটাকেই অনেকে গায়েব হিসেবে জানে কিন্তু এটা কি আসলে গায়েব? এটা গায়েব হলে ওহী কোনটা? তাছাড়া এসব বিষয় গায়েব হয়ে থাকলে সেই গায়েবতো রাসূল (সাঃ) এর আগে হযরত জিব্রাইল (আঃ) জানতেন মূলত এসব বিষয় রাসুল (সাঃ) ওহীর মাধ্যমে জানতেন আর নবী রাসূলের কাছে আল্লাহ তায়ালা ওহী পাঠাবেন তাতো স্বাভাবিক ব্যাপার কারণ ওহী ছাড়া নবী হয় না সুতরাং এ বিষয়ে বিতর্ক না করে বরং কোরআনের আয়াতগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাই হবে মুমিনদের ঈমানি দায়িত্ব

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন