বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫

বিয়ের দাওয়াত : গিফটের বিনিময়ে খাদ্য!

আমাদের পাশের বাড়ির পরিবারটা বেশ অস্বচ্ছল একদিন শুনি মা তার ছেলেকে বলছে- আজকে শাহানার গায়ে হলুদ
ছেলে : তো, যাও!
মা : নাহ! যামু না। (বিয়েতে) গেলেই পাঁচশ টাকা দিতে হইবো। আমার নিজেরই টানাটানির সংসার। পাঁচশ টাকাও অনেক।

ঘটনাটা বললাম এই কারণে যে, দেখতে পাচ্ছি- বর্তমানে আত্মীয়তার সম্পর্কটি যেন টাকার কাছে ম্লান হয়ে গেছে। এই যেমন পাঁচশ টাকা দিলে সেই মহিলার সংসারে অর্থিক অসুবিধা হবে -এই আশঙ্কায় দাওয়াতী মেহমান হওয়ার পরও তিনি যাননি। যদি এমন হতো যে বিয়েতে গিফট দেয়ার কোনো চিন্তা না থাকতো তাহলে হয়তো কোনো চিন্তা না করে সম্পর্কের টানে বিয়ের দাওয়াতে তথা তাদের আনন্দে শামিল হতেন
যদিও আমরা জানি, মানুষ মানুষকে গিফট দেয় খুশি মনে, এটা জোর করে চেয়ে নেয়ার বিষয় না। তবে আজকাল যেন বিয়েতে গিফট দেয়া- একটা বাধ্যতামূলক কাজ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়- কেউ বিয়েতে কম মূল্যের গিফট দিলে তার বদনাম করা হয়, তাকে ছোটলোক ভাবা হয়
এদিকে, আজকাল নগদ হিসাবে এক হাজার টাকার নিচে গিফট দেয়া যায় না। আপনজন হলে টাকার পরিমাণ আরো বাড়াতে হয়।

বিয়ের দাওয়াত একটা আনন্দের খবর। কিন্তু দাওয়াত পেয়ে এখন মানুষ খুশি হওয়ার চেয়ে গিফটের কথা চিন্তা করে হিসাব কষতে থাকে। অন্যদিকে যারা দাওয়াত দিয়েছেন তারাও অনুষ্ঠানে সেন্টারের এক কর্ণারে টেবিল লাগিয়ে গিফট নেয়ার ব্যবস্থা রাখেন। কে কত টাকা দিলো তা খাতায় লিপিবদ্ধ হতে থাকে। এই কাজের জন্য আপন বিশ্বস্ত কাউকে টেবিলের কাজে বসানো হয়। আবার এমনও কিছু পরিবারের কর্তা আছেন যারা এই গিফটের হিসাব লিপিবদ্ধ করা খাতাটি সযত্নে উঠিয়ে রাখেন। কেউ দাওয়াত দিলে তার সেই পুরোনো খাতা বের করে দেখেন, ওই ব্যক্তি তার দাওয়াতে কত দিয়েছিল। তাই দেখে তাকে গিফট দেয়া হয়। কি অদ্ভূত কাণ্ড! কেমন আত্মীয়তা! কেমন সম্পর্ক!
এদিকে গিফটের চক্করে পড়ে দেখা যায়- অনেক গরিব মেহমানরা আসেন না বা তাদের আর্থিক অবস্থা সবার সামনে প্রকাশ পাবে- এমনটি ভেবে কষ্ট করে হলেও গিফট জোগাড় করে তারপর আসেন। মনে মনে তারা দুঃখ করে বলেন- 'সমাজে সম্মান নিয়ে বাঁচতে হলে এমনটি করতেই হয়!'
আসলে আমরা সামাজিক রীতিনীতিকে এতটাই কঠিন করে ফেলেছি যে, তা কখনো দেখা যাচ্ছে মানুষকে বাধ্য করছে, কখনো বা একটা ভুল বার্তা সমাজে ছড়াচ্ছে। তাই কিছু মানুষ মন থেকে সেগুলো মেনে না নিলেও 'সমাজে থাকতে হলে এসব করে থাকতে হবে'- এমন একটা ধারণা জন্মে গেছে। আমাদেরকে বদলাতে হবে এটাকেই
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- বিয়ের অনুষ্ঠানের মধ্যে সেই অনুষ্ঠানটিই নিকৃষ্ট যাতে ধনীদের দাওয়াত দেয়া হয় আর গরিবদের উপেক্ষা করা হয়। (মিশকাত)
আমি গিফট দেয়া-নেয়ার বিরোধিতা করছি না। কেননা রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- 'তোমরা পরষ্পরের মধ্যে গিফট আদান-প্রদান করো এতে তোমাদের সম্পর্ক গভীর হবে' তবে বর্তমানের বিয়ের গিফট প্রদান প্রথা দেখে মনে হচ্ছে- মেহমানেরা বাধ্য হয়েই গিফট নিয়ে আসছেন। যেন গিফটের বিনিময়ে খাদ্য!
তাই বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে বলতেই হয়- বিয়েতে এই সিস্টেম তুলে ফেলা উচিত। আত্মীয়দের মধ্যে কে বড়লোক, কে গরিব এসব বাছ-বিচার না করে, কারো কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা না করে সন্তুষ্ট চিত্তে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দাওয়াত খাওয়াতে হবে। আর কারো যদি একান্তই গিফট দিতে ইচ্ছা করে বা তিনি নাছোড় বান্দা হয়ে গিফট দিতে প্রস্তুত, তাহলে- সদ্য বিবাহিত পরিবারে গিয়ে তাদের সুখী পরিবার দেখে তাদের হাতে গিফট দেয়াটাই ভালো মনে করি।collected
আমাদের পাশের বাড়ির পরিবারটা বেশ অস্বচ্ছল। একদিন শুনি মা তার ছেলেকে বলছে- আজকে শাহানার গায়ে হলুদ।
ছেলে : তো, যাও!
মা : নাহ! যামু না। (বিয়েতে) গেলেই পাঁচশ টাকা দিতে হইবো। আমার নিজেরই টানাটানির সংসার। পাঁচশ টাকাও অনেক।

ঘটনাটা বললাম এই কারণে যে, দেখতে পাচ্ছি- বর্তমানে আত্মীয়তার সম্পর্কটি যেন টাকার কাছে ম্লান হয়ে গেছে। এই যেমন পাঁচশ টাকা দিলে সেই মহিলার সংসারে অর্থিক অসুবিধা হবে -এই আশঙ্কায় দাওয়াতী মেহমান হওয়ার পরও তিনি যাননি। যদি এমন হতো যে বিয়েতে গিফট দেয়ার কোনো চিন্তা না থাকতো তাহলে হয়তো কোনো চিন্তা না করে সম্পর্কের টানে বিয়ের দাওয়াতে তথা তাদের আনন্দে শামিল হতেন।
যদিও আমরা জানি, মানুষ মানুষকে গিফট দেয় খুশি মনে, এটা জোর করে চেয়ে নেয়ার বিষয় না। তবে আজকাল যেন বিয়েতে গিফট দেয়া- একটা বাধ্যতামূলক কাজ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়- কেউ বিয়েতে কম মূল্যের গিফট দিলে তার বদনাম করা হয়, তাকে ছোটলোক ভাবা হয়।
এদিকে, আজকাল নগদ হিসাবে এক হাজার টাকার নিচে গিফট দেয়া যায় না। আপনজন হলে টাকার পরিমাণ আরো বাড়াতে হয়।

বিয়ের দাওয়াত একটা আনন্দের খবর। কিন্তু দাওয়াত পেয়ে এখন মানুষ খুশি হওয়ার চেয়ে গিফটের কথা চিন্তা করে হিসাব কষতে থাকে। অন্যদিকে যারা দাওয়াত দিয়েছেন তারাও অনুষ্ঠানে সেন্টারের এক কর্ণারে টেবিল লাগিয়ে গিফট নেয়ার ব্যবস্থা রাখেন। কে কত টাকা দিলো তা খাতায় লিপিবদ্ধ হতে থাকে। এই কাজের জন্য আপন বিশ্বস্ত কাউকে টেবিলের কাজে বসানো হয়। আবার এমনও কিছু পরিবারের কর্তা আছেন যারা এই গিফটের হিসাব লিপিবদ্ধ করা খাতাটি সযত্নে উঠিয়ে রাখেন। কেউ দাওয়াত দিলে তার সেই পুরোনো খাতা বের করে দেখেন, ওই ব্যক্তি তার দাওয়াতে কত দিয়েছিল। তাই দেখে তাকে গিফট দেয়া হয়। কি অদ্ভূত কাণ্ড! এ কেমন আত্মীয়তা! এ কেমন সম্পর্ক!
এদিকে গিফটের চক্করে পড়ে দেখা যায়- অনেক গরিব মেহমানরা আসেন না বা তাদের আর্থিক অবস্থা সবার সামনে প্রকাশ পাবে- এমনটি ভেবে কষ্ট করে হলেও গিফট জোগাড় করে তারপর আসেন। মনে মনে তারা দুঃখ করে বলেন- 'সমাজে সম্মান নিয়ে বাঁচতে হলে এমনটি করতেই হয়!'
আসলে আমরা সামাজিক রীতিনীতিকে এতটাই কঠিন করে ফেলেছি যে, তা কখনো দেখা যাচ্ছে মানুষকে বাধ্য করছে, কখনো বা একটা ভুল বার্তা সমাজে ছড়াচ্ছে। তাই কিছু মানুষ মন থেকে সেগুলো মেনে না নিলেও 'সমাজে থাকতে হলে এসব করে থাকতে হবে'- এমন একটা ধারণা জন্মে গেছে। আমাদেরকে বদলাতে হবে এটাকেই।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- বিয়ের অনুষ্ঠানের মধ্যে সেই অনুষ্ঠানটিই নিকৃষ্ট যাতে ধনীদের দাওয়াত দেয়া হয় আর গরিবদের উপেক্ষা করা হয়। (মিশকাত)
আমি গিফট দেয়া-নেয়ার বিরোধিতা করছি না। কেননা রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- 'তোমরা পরষ্পরের মধ্যে গিফট আদান-প্রদান করো এতে তোমাদের সম্পর্ক গভীর হবে'। তবে বর্তমানের বিয়ের গিফট প্রদান প্রথা দেখে মনে হচ্ছে- মেহমানেরা বাধ্য হয়েই গিফট নিয়ে আসছেন। এ যেন গিফটের বিনিময়ে খাদ্য!
তাই বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে বলতেই হয়- বিয়েতে এই সিস্টেম তুলে ফেলা উচিত। আত্মীয়দের মধ্যে কে বড়লোক, কে গরিব এসব বাছ-বিচার না করে, কারো কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা না করে সন্তুষ্ট চিত্তে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দাওয়াত খাওয়াতে হবে। আর কারো যদি একান্তই গিফট দিতে ইচ্ছা করে বা তিনি নাছোড় বান্দা হয়ে গিফট দিতে প্রস্তুত, তাহলে- সদ্য বিবাহিত পরিবারে গিয়ে তাদের সুখী পরিবার দেখে তাদের হাতে গিফট দেয়াটাই ভালো মনে করি।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/40459#sthash.xiayHlko.dpuf
আমাদের পাশের বাড়ির পরিবারটা বেশ অস্বচ্ছল। একদিন শুনি মা তার ছেলেকে বলছে- আজকে শাহানার গায়ে হলুদ।
ছেলে : তো, যাও!
মা : নাহ! যামু না। (বিয়েতে) গেলেই পাঁচশ টাকা দিতে হইবো। আমার নিজেরই টানাটানির সংসার। পাঁচশ টাকাও অনেক।

ঘটনাটা বললাম এই কারণে যে, দেখতে পাচ্ছি- বর্তমানে আত্মীয়তার সম্পর্কটি যেন টাকার কাছে ম্লান হয়ে গেছে। এই যেমন পাঁচশ টাকা দিলে সেই মহিলার সংসারে অর্থিক অসুবিধা হবে -এই আশঙ্কায় দাওয়াতী মেহমান হওয়ার পরও তিনি যাননি। যদি এমন হতো যে বিয়েতে গিফট দেয়ার কোনো চিন্তা না থাকতো তাহলে হয়তো কোনো চিন্তা না করে সম্পর্কের টানে বিয়ের দাওয়াতে তথা তাদের আনন্দে শামিল হতেন।
যদিও আমরা জানি, মানুষ মানুষকে গিফট দেয় খুশি মনে, এটা জোর করে চেয়ে নেয়ার বিষয় না। তবে আজকাল যেন বিয়েতে গিফট দেয়া- একটা বাধ্যতামূলক কাজ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়- কেউ বিয়েতে কম মূল্যের গিফট দিলে তার বদনাম করা হয়, তাকে ছোটলোক ভাবা হয়।
এদিকে, আজকাল নগদ হিসাবে এক হাজার টাকার নিচে গিফট দেয়া যায় না। আপনজন হলে টাকার পরিমাণ আরো বাড়াতে হয়।

বিয়ের দাওয়াত একটা আনন্দের খবর। কিন্তু দাওয়াত পেয়ে এখন মানুষ খুশি হওয়ার চেয়ে গিফটের কথা চিন্তা করে হিসাব কষতে থাকে। অন্যদিকে যারা দাওয়াত দিয়েছেন তারাও অনুষ্ঠানে সেন্টারের এক কর্ণারে টেবিল লাগিয়ে গিফট নেয়ার ব্যবস্থা রাখেন। কে কত টাকা দিলো তা খাতায় লিপিবদ্ধ হতে থাকে। এই কাজের জন্য আপন বিশ্বস্ত কাউকে টেবিলের কাজে বসানো হয়। আবার এমনও কিছু পরিবারের কর্তা আছেন যারা এই গিফটের হিসাব লিপিবদ্ধ করা খাতাটি সযত্নে উঠিয়ে রাখেন। কেউ দাওয়াত দিলে তার সেই পুরোনো খাতা বের করে দেখেন, ওই ব্যক্তি তার দাওয়াতে কত দিয়েছিল। তাই দেখে তাকে গিফট দেয়া হয়। কি অদ্ভূত কাণ্ড! এ কেমন আত্মীয়তা! এ কেমন সম্পর্ক!
এদিকে গিফটের চক্করে পড়ে দেখা যায়- অনেক গরিব মেহমানরা আসেন না বা তাদের আর্থিক অবস্থা সবার সামনে প্রকাশ পাবে- এমনটি ভেবে কষ্ট করে হলেও গিফট জোগাড় করে তারপর আসেন। মনে মনে তারা দুঃখ করে বলেন- 'সমাজে সম্মান নিয়ে বাঁচতে হলে এমনটি করতেই হয়!'
আসলে আমরা সামাজিক রীতিনীতিকে এতটাই কঠিন করে ফেলেছি যে, তা কখনো দেখা যাচ্ছে মানুষকে বাধ্য করছে, কখনো বা একটা ভুল বার্তা সমাজে ছড়াচ্ছে। তাই কিছু মানুষ মন থেকে সেগুলো মেনে না নিলেও 'সমাজে থাকতে হলে এসব করে থাকতে হবে'- এমন একটা ধারণা জন্মে গেছে। আমাদেরকে বদলাতে হবে এটাকেই।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- বিয়ের অনুষ্ঠানের মধ্যে সেই অনুষ্ঠানটিই নিকৃষ্ট যাতে ধনীদের দাওয়াত দেয়া হয় আর গরিবদের উপেক্ষা করা হয়। (মিশকাত)
আমি গিফট দেয়া-নেয়ার বিরোধিতা করছি না। কেননা রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- 'তোমরা পরষ্পরের মধ্যে গিফট আদান-প্রদান করো এতে তোমাদের সম্পর্ক গভীর হবে'। তবে বর্তমানের বিয়ের গিফট প্রদান প্রথা দেখে মনে হচ্ছে- মেহমানেরা বাধ্য হয়েই গিফট নিয়ে আসছেন। এ যেন গিফটের বিনিময়ে খাদ্য!
তাই বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে বলতেই হয়- বিয়েতে এই সিস্টেম তুলে ফেলা উচিত। আত্মীয়দের মধ্যে কে বড়লোক, কে গরিব এসব বাছ-বিচার না করে, কারো কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা না করে সন্তুষ্ট চিত্তে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দাওয়াত খাওয়াতে হবে। আর কারো যদি একান্তই গিফট দিতে ইচ্ছা করে বা তিনি নাছোড় বান্দা হয়ে গিফট দিতে প্রস্তুত, তাহলে- সদ্য বিবাহিত পরিবারে গিয়ে তাদের সুখী পরিবার দেখে তাদের হাতে গিফট দেয়াটাই ভালো মনে করি।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/40459#sthash.xiayHlko.dpuf

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন