বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৫

ইল্‌ম অর্জনে উপর গুরুত্ব

সমস্ত প্রশংসা সৃষ্টিকুলের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজন ও সঙ্গিসাথীদের প্রতি। হে আল্লাহ! আপনি যাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন আমাদেরকে তাদের অর্ন্তভুক্ত করে নিন। আপনি যাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করেছেন আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত করুন। যাদেরকে আপনার বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছেন আমাদেরকে তাদের তালিকাভুক্ত করে নিন। হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরগুলোকে পরিশুদ্ধ করে দিন। আমাদের আমলসমূহকে উত্তম করে দিন। আমাদেরকে সঠিক কথা বলার তাওফিক দিন। আপনি যা পছন্দ করেন ও ভালবাসেন তা আমাদেরকে পালন করার তাওফিক দিন। আমাদেরকে আপনার নবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসারী বানিয়ে দিন। 

আজ রাত্রে আমরা ইল্‌ম অর্জনের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপক্রমনিকা পেশ করব। এই বিষয়ে আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে- আমরা তরুণসমাজের মধ্যে ইল্‌ম অর্জনের ব্যাপক আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করছি। আল্লাহ তাদেরকে মোবারকময় করুন। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই জানে না তারা কোন্ পথে অগ্রসর হবে, কিভাবে ইল্‌ম অর্জন করবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইল্‌ম অর্জনের পথে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে। এমনকি বছরের পর বছর ব্যয় করে। পরিশেষে দেখে যে, একই সময় ব্যয় করে অন্যেরা যতটুকু ইল্‌ম অর্জন করতে পেরেছে সে ততটুকু পারেনি। এর কারণ হচ্ছে- সেই ছাত্র ইল্‌ম অর্জনের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেনি। যে পদ্ধতি অনুসরণ করলে সে তার লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবে। আল্লাহ তার তাকদীরে যতটুকু ইল্‌ম অর্জন লিখে রেখেছেন ততটুকু হাছিল করতে পারবে। যার মাধ্যমে সে নিজে উপকৃত হবে এবং অন্যদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারবে। যে পদ্ধতির মাধ্যমে তার ইলম হবে মজবুত ভিত্তিনির্ভর। যার ভিত্তিতে সে অন্যকে শিক্ষা দিতে পারবে। যে ইল্‌মের মধ্যে কোনরূপ সন্দেহ ও সংশয়ের রেশ থাকবে না।

অনেক তরুণ আছে- যারা কিছুক্ষণ হাদিস, কিছুক্ষণ তাফসির, কিছুক্ষণ ফিকহ এভাবে বিক্ষিপ্তভাবে পড়াশুনা করে। তারা ইল্‌মের আসরগুলোতে নিয়মিত হাযির হয়। একবছর বা দুইবছর একজন শাইখের ক্লাশ করার পর যখন নিজেকে পর্যালোচনা করে তখন দেখতে পায়- এতদিন যে বিষয়ের ক্লাশে সে হাযির হয়েছে আসলে ঐ বিষয়টি সে বুঝে না। অথবা যতটুকু সে অর্জন করেছে তা যৎসামান্য। অথবা তার অর্জিত ইল্‌মের ভিত্তিমূল খুব দুর্বল। এর উপর নির্ভর করে তার পক্ষে নতুন কিছু বুঝা বা গবেষণা করা সম্ভবপর নয়। কারণ কী! কারণ হলো- ইল্‌ম অর্জনের সঠিক ক্রমধারা অনুসরণ না-করা। তালিবে ইল্‌ম বা জ্ঞান অর্জনকারীকে ইল্‌ম হাছিলের সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট ক্রমধারা অনুসরণ করতে হবে। সঠিক ক্রমধারা অনুসরণ না করলে সে ইল্‌মের পথ থেকে ছিটকে পড়ে যাবে। এ কারণে আমরা অনেক তালিবে ইল্‌মকে ইল্‌ম অর্জনের পথ ছেড়ে দিতে দেখি। কয়েক বছর হয়তো ইল্‌ম অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যায়। শেষমেষ বিরক্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। মাস চলে যায়, বছর চলে যায় কিন্তু তারা সাধারণ মানুষই থেকে যায় অথবা পাঠক হিসেবেই থেকে যায়, এর গণ্ডি অতিক্রম করতে পারে না। যে ছাত্র ইল্‌মের পথে অগ্রসর হতে চায় আমরা কামনা করি তার মধ্যে দুইটি বৈশিষ্ট্য থাকবে: 
এক: আমাদের পূর্বসুরিগণ যে ক্রমধারা অবলম্বন করে ইল্‌ম অর্জন করে আলেম হয়েছেন সেই ক্রমধারা বজায় রেখে ইল্‌ম অর্জন করবে। 
দুই: নিজের সময়, শ্রম সবকিছু ইল্‌মের জন্য বিলিয়ে দিবে; কোনোক্রমেই হতোদ্দম হবে না। 
খতিব আল-বাগদাদী তাঁর আল-জামে‘ লি আখলাকির রা-ওয়ী ও আ-দা-বিস্‌ সা-মি‘ গ্রন্থে বর্ণনা করেন যে, একবার এক ছাত্র হাদিস অর্জনে মনোনিবেশ করেন। তিনি খুব আগ্রহ নিয়ে এ পথে আসেন। ব্যক্তিগতভাবে হাদিসের উস্তাদদের নিকট গিয়ে ও সামষ্টিক আসরগুলোতে উপস্থিত হয়ে হাদিস অর্জনে নিমগ্ন হন। কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি দেখলেন যে, তিনি বেশী কিছু শিখতে পারেননি। তার অর্জিত ইলম যৎসামান্য। তখন তিনি এই ভাবনা থেকে ইল্‌ম অর্জন ছেড়ে দিলেন যে- এই ইল্‌ম অর্জন তার জন্য নয়, তার বোধশক্তিতে দুর্বলতা আছে। অথবা তিনি এই ইল্‌মের উপযুক্ত নন। ইল্‌ম অর্জন ছেড়ে দেওয়ার বেশ কিছুদিন পর একবার তিনি একটি বড় পাথরের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় তিনি খেয়াল করলেন যে, ফোঁটা ফোঁটা পানি এ পাথরের উপর পড়ে পাথরের গায়ে গর্তের সৃষ্টি করেছে। এ দৃশ্যটি তার চিন্তার জগতে রেখাপাত করে। তিনি ভাবতে লাগলেন: পানি এত দুর্বল হওয়ার পরেও এ কঠিন পাথরকে গর্ত করে ফেলেছে। আমার বিবেকবুদ্ধি বা অন্তর এই পাথরের চেয়ে তো কঠিন নয়। আর ইল্‌ম তো এই পানির চেয়ে দুর্বল নয়। এই ঘটনার পর তিনি পুনরায় ইল্‌মের পথে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ফিরে এসে সত্যি সত্যি তিনি ইল্‌মে দ্বীনে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন এবং খ্যাতিমান আলেম হন।

এই ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি, ইল্‌ম অর্জনের জন্য ইস্পাত কঠিন সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। হতোদ্দম হয়ে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। এই কথা বললে চলবে না - আমি পড়েছি; বুঝি নাই। বরঞ্চ কারণ খুঁজে বের করতে হবে। অধিকাংশ তরুণের ক্ষেত্রে কারণ এটা নয় যে- তারা বুঝে না। তাদের অনেকে ভাল সমঝদার। কিন্তু তারা ইল্‌ম অর্জনের সঠিক শিক্ষাক্রম অনুসরণ করেনি। যে শিক্ষাক্রম আমাদের পূর্বসুরি আলেমগণ অনুসরণ করেছেন। পূর্ববর্তী আলেমগণের অনুসৃত শিক্ষাক্রম হচ্ছে- সহজ। বরং বর্তমানে যারা নানা পথ ও পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দিচ্ছেন সেসব হতে সহজতর। 
আমরা যখন এইটুকু বুঝলাম তখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে- এটি অনেক তরুণেরই প্রশ্ন - ইল্‌ম অর্জনের সঠিক ক্রমধারা কোনটি? কিভাবে তালিবে ইল্‌ম সঠিক শিক্ষাক্রম অনুসরণ করতে পারবে? যে শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে আল্লাহ চাহেত সে আলেম হতে পারবে। এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ইল্‌মের আসরগুলোতে হাযির হওয়ার উপকার অনেক; সন্দেহ নেই। কিন্তু সবচেয়ে বড় উপকার হচ্ছে- ইল্‌মের আসরে যা পড়ানো হয়েছে তা নিজে বুঝতে পারা এবং অন্যকে বুঝানোর যোগ্যতা হাছিল করা। 
প্রথমত: ইল্‌ম হাছিল করতে হলে তালিবে ইল্‌মের মধ্যে প্রয়োজনীয় আদব আখলাক থাকতে হবে:
এক: ইল্‌ম অর্জন করতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য; যেহেতু ইল্‌মে দ্বীন অর্জন একটি ইবাদত। তালিবে ইল্‌মের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহর ফেরেশতারা ডানা বিছিয়ে দেয় মর্মে হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। আল্লাহর দরবারে এই ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য এবং আল্লাহ তাকে এই ইবাদত করার তাওফিক দেয়ার জন্য তালিবে ইল্‌মকে আল্লাহর প্রতি মুখলিস (একনিষ্ঠ) হতে হবে। কোন দুনিয়াবী পদ বা পদবী পাওয়ার নিয়তে ইল্‌ম অর্জন করা যাবে না। অর্থাৎ ইলমে শরয়ী তথা কুরআন ও হাদিসের ইল্‌ম সুনাম-সুখ্যাতি অর্জন, শিক্ষক হওয়া, প্রভাষক হওয়া, জনগণের দৃষ্টি কেড়ে নেওয়া বা আলোচনা পেশ করার সুযোগ পাওয়ার নিমিত্তে অর্জন করা যাবে না। বরং তালিবে ইল্‌মের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর ইবাদত করা, নিজের অজ্ঞতা দূর করা এবং সুস্পষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে ব্যক্তি নিজে আল্লাহর ইবাদত করতে সমর্থ হওয়া।

তাহলে বুঝা গেল যে, ইল্‌ম অর্জনের ক্ষেত্রে ইখলাস বা একনিষ্ঠতার অর্থ হলো- আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রত্যাশা করা; দুনিয়াবী কোনো কিছু প্রত্যাশা না করা। তার নিয়ত হবে- নিজের অজ্ঞতা দূর করা। ইমাম আহমাদ রাহেমাহুল্লাহ কে একবার জিজ্ঞেস করা হলো: ইল্‌ম অর্জনের ক্ষেত্রে ইখলাস বলতে কি বুঝায়? তিনি বললেন: ইল্‌ম অর্জনের ক্ষেত্রে ইখলাস হলো- নিজের অজ্ঞতা দূর করার নিয়ত করা। যেহেতু একজন আলেম আর একজন সাধারণ মানুষ সমমর্যাদার অধিকারী নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ أَمَّنۡ هُوَ قَٰنِتٌ ءَانَآءَ ٱلَّيۡلِ سَاجِدٗا وَقَآئِمٗا يَحۡذَرُ ٱلۡأٓخِرَةَ وَيَرۡجُواْ رَحۡمَةَ رَبِّهِۦۗ قُلۡ هَلۡ يَسۡتَوِي ٱلَّذِينَ يَعۡلَمُونَ وَٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَۗ﴾ [الزمر: ٩] 
“যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সেজদার মাধ্যমে অথবা দাঁড়িয়ে ইবাদত করে, আখেরাতের আশংকা রাখে এবং তার রবের রহমত প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান যে এরূপ করে না? বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না উভয় কি সমান হতে পারে?” [সূরা যুমার, আয়াত:৯] 
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
﴿يَرۡفَعِ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡعِلۡمَ دَرَجَٰتٖۚ﴾ [المجادلة: ١١] 
“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন”। [সূরা মুজাদালাহ্‌, আয়াত :১০] আয়াত থেকে বুঝা গেল- আল্লাহ তা‘আলা আহলে ইলমকে (ইল্‌মধারীকে) সাধারণ বান্দাদের উপর মর্যাদা দান করেছেন। যে ব্যক্তি ইল্‌মের ভিত্তিতে আল্লাহর ইবাদত করার নিয়ত করে, নিজেকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে বাঁচাতে চায় এবং বাস্তব জীবনে শরিয়তের অনুসারী হওয়ার নিয়ত করে সে ইল্‌ম অর্জনের ক্ষেত্রে ইখলাস হাছিল করেছে। যেহেতু সে এই ইল্‌মের মাধ্যমে আল্লাহ সন্তুষ্টি প্রত্যাশা করেছে এবং নিজের প্রবৃত্তি-খেয়ালখুশির অন্ধ-অনুসরণ ও মূর্খতা থেকে নিজেকে বাঁচানোর ইচ্ছা করেছে। 
বস্তুত ইখলাস হচ্ছে- তালিবে ইল্‌মের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তালিবে ইল্‌মের আরো অনেক গুণাবলী রয়েছে। এ বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচিত ও সংকলিত হয়েছে। এর কোনটির কলেবর ছোট, কোনটির কলেবর বড়। তবে এখানে স্থান অনুযায়ী এর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমরা উল্লেখ করব।

দুই: ইল্‌ম অর্জনে নিজেকে কোমল হতে হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাধারণভাবে বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা সর্ব ক্ষেত্রে কোমলতা পছন্দ করেন।” এই হাদিসটির বিধান সাধারণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন: “যা কিছুতে কোমলতা থাকে, কোমলতা সেটাকে সৌন্দয্যমণ্ডিত করে।” ইলমে দ্বীন ও তা হাসিলেও এ কোমলতা অবলম্বন একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ। 

ইল্‌ম অর্জনে কিভাবে কোমলতা অবলম্বন করা যাবে- সেটাই প্রশ্ন। অর্থাৎ সব ইল্‌ম একসাথে হাসিলে নিমগ্ন হওয়া যাবে না। ঠিক যেমনটি বলেছেন প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইবনে শিহাব যুহরী রাহেমাহুল্লাহ। তিনি বলেন: “যে তালিবে ইল্‌ম সব ইল্‌ম একত্রে অর্জনের ইচ্ছা করে তার সব ইল্‌ম একসাথে বিলুপ্ত হয়ে যায়। বরং ইল্‌ম অর্জন করতে হবে রাতদিন ব্যয় করে ধীরে ধীরে।” জনৈক কবি এই অর্থ বুঝাতে গিয়ে বলেছেন

اَلْيَوْمَ عِلْمٌ وَغَدًا مِثْلُــهُ مِنْ نُخَبِ الْعِلْم الَّتِيْ تُلْتُقَطُ
يَحْصُلُ الْمَرْءُ بِهَا حِكْمَةً وَإِنَّمَا السَّيْلُ اِجْتِمَاعُ النُّقَطِ
আজ কিছু ইল্‌ম, কালকে আরো কিছু; এভাবেই কুড়াতে হয় পছন্দনীয় ইল্‌মগুলো
ক্রমধারায় অর্জিত হলে তা হয় প্রজ্ঞাময়; জেনে রাখ, ফোটা ফোটা জল জমাট হয়েই তৈরী হয় বন্যা।

এজন্য কোমলতা একান্ত কাম্য। কিভাবে কোমলতা অবলম্বন করা হবে? অর্থাৎ সব ইল্‌ম একবারে পেয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষী হলে চলবে না। যেমন ধরুন একজন ছাত্র তাফসিরবিদ্যা হাছিল করতে চাচ্ছেন। তিনি তাফসিরে তাবারী দিয়ে অধ্যয়ন শুরু করলেন। তাফসিরে তাবারী হচ্ছে- বহুমুখী তাফসিরের সুতিকাগার। এই ছাত্রের ক্ষেত্রে বলা হবে- তিনি তাফসিরের সব ইল্‌ম একবারে অর্জনে নিমগ্ন হয়েছেন। এই ছাত্র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাফসিরে তাবারী পড়া শেষ করবে বটে, তবে তার তাফসিরের ইল্‌ম হাছিল হবে না। আপনি যদি তাকে কোন একটি আয়াতের তাফসির জিজ্ঞেস করেন দেখবেন সে ছাত্র খুব বেশী কিছু মনে করতে পারছে না। তার কাছে শুধু ধাঁধা লাগবে। মনে হবে সে এমন এমন পড়েছেন। কিন্তু সে পরিস্কারভাবে একটি আয়াতের তাফসিরও পেশ করতে পারবে না। তাহলে কি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে? ক্রমধারা অবলম্বন করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। ক্রমধারা হচ্ছে- পূর্ববর্তী আলেমগণের অনুসৃত পথ ও পদ্ধতি। 

অনুরূপভাবে এক ব্যক্তি হাদিসের ইল্‌ম অর্জন করতে চাচ্ছেন। তিনি গিয়ে নাইলুল আওতার থেকে পড়া শুরু করলেন। অথবা ফাতহুল বারী পড়া শুরু করলেন। তিনি বলে বেড়ান: আমি ফাতহুল বারীর অমুক খণ্ড শেষ করেছি। জেনে রাখুন, এই ব্যক্তি ইল্‌ম হাছিল করতে পারবে না। যে ইল্‌ম আলেমগণ হাছিল করেছেন। ইনি সর্বোচ্চ ইসলামী সাধারণ জ্ঞানের অধিকারী (সাংস্কৃতিবান!) হতে পারবেন; যার কাছে বিক্ষিপ্ত কিছু তথ্য থাকবে। কিন্তু এটি ইল্‌ম নয়; যে ইল্‌ম সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। যে ইল্‌ম অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ তাওফিক দিলে আলেমে দ্বীন হওয়া যাবে। 

অনুরূপভাবে এমন ছাত্র পাওয়া যায় তাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আপনি ফিকহ শাস্ত্রের ওপর কি কি গ্রন্থ পড়েছেন। তিনি উত্তর দেন আমি ইবনে কুদামার মুগনী পড়ি; আমি ইমাম নববীর মাজমু পড়ি। এ ছাত্র ইল্‌ম হাছিলের ক্ষেত্রে কোমলতা অবলম্বনকারী নয়। বরং সে সব ইল্‌ম একবারে হাছিল করতে চেয়েছে। মুগনী, মাজমু, ইত্যাদি বড় বড় গ্রন্থগুলোর আলোচনা হজম করতে পারবেন বড় বড় আলেমগণ। প্রাথমিক পর্যায়ের তালিবে ইল্‌মের এসব গ্রন্থ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটানা পড়ে লাভ নেই। হ্যাঁ, বিশেষ প্রয়োজনে বিশেষ কোনো মাসআলা অনুসন্ধানের জন্য তালিবে ইল্‌ম এ ধরনের বড় বড় গ্রন্থের আশ্রয় নিতে পারে। কিন্তু সে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানা পড়বে না।

কোমলতা প্রসঙ্গে আমরা আরো বলতে চাই- তালিবে ইল্‌ম কোনো বিষয়ের বিস্তারিত, খুঁটিনাটি আলোচনার উপর গুরুত্ব দিবে না। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ের তালিবে ইল্‌ম যদি সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম মাসআলা ও বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তাহলে মূল মাসআলাটাই ভুলে যাবে। এভাবে সে ইল্‌ম হাছিল করতে পারবে না। কারণ যে মূলনীতিগুলো জানলে বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণগুলো বুঝা যাবে সে তো সেসব মূলনীতি জানে না। আমাদের আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁদের আসরগুলোতে অতি বিস্তারিত আলোচনায় অনুপ্রবেশ করেন। একটি মতন বা পাঠ্যপুস্তিকার ব্যাখ্যায় তাঁরা বছরের পর বছর কাটিয়ে দেন অথবা একটি পরিচ্ছেদের ব্যাখ্যায় তাঁরা কয়েক মাস কাটিয়ে দেন। তাঁদের ধারনায় এভাবে ইল্‌ম হাছিল হবে। আসলে তা ঠিক নয়; এটি ধারাবাহিক পদ্ধতি নয়। কারণ এই আলেম তাঁর ক্লাশ উপস্থাপনায় কোমলতা অবলম্বন করেন নি। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿وَلَٰكِن كُونُواْ رَبَّٰنِيِّ‍ۧنَ بِمَا كُنتُمۡ تُعَلِّمُونَ ٱلۡكِتَٰبَ وَبِمَا كُنتُمۡ تَدۡرُسُونَ ٧٩ ﴾ [ال عمران: ٧٩] 
অর্থ: “কিন্তু তোমরা আল্লাহর কিতাব শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে ও নিজেরা অধ্যয়নের ক্ষেত্রে রব্বানী হও।” [সূরা আলে-ইমরান:৭৯]
ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ হাদিসের গ্রন্থে “তোমরা রব্বানী হও” এর ব্যাখ্যায় বলেন: “রব্বানী হচ্ছেন তিনি, যিনি মানুষকে বড় বড় ইল্‌ম শিক্ষাদানের পূর্বে ছোট ছোট ইল্‌ম শিক্ষা দেন।” অর্থাৎ ইল্‌ম অর্জন ও বিতরণের ক্ষেত্রে রব্বানী হচ্ছেন তিনি, যিনি মানুষকে বড় বড় ইল্‌মের পূর্বে ছোট ছোট ইল্‌ম শিক্ষা দেন। 
হ্যাঁ, ছাত্র ও শিক্ষকের জন্য এটা সম্মানজনক যে, কোনো একটি মাসআলা নিয়ে উনি যা কিছু পড়েছেন সবকিছু উল্লেখ করতে পারা। পাঠদানের প্রস্তুতিকালে তিনি যা কিছু পড়েছেন বা জেনেছেন সবকিছু পাঠদানের সময় উল্লেখ করতে পারা সম্মানের বিষয় বটে; কিন্তু এটি ছাত্রের জন্য কল্যাণকর নয়। কারণ তিনি যা কিছু জানেন সবকিছু ঢেলে দিয়েছেন। অথচ আলেমের উচিত হচ্ছে ছাত্রের প্রয়োজন অনুপাতে তাকে জ্ঞান দেওয়া। ছাত্রের ধারণক্ষমতার উর্ধ্বে জ্ঞান না-দেওয়া। অতএব ইল্‌ম অর্জনে কোমলতা ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন করতে হতে হবে। কিভাবে কোমলতা ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন করতে হবে? ইল্‌ম হাছিলের সঠিক ক্রমধারা অবলম্বনের আলোচনায় এর জবাব আসবে।

তিন: ইল্‌ম অর্জনে নিয়মানুবর্তী হতে হবে। তালিবে ইল্‌ম তার সবচেয়ে উত্তম সময় ইল্‌ম অর্জনে ব্যয় করবে। মরা সময় ইল্‌ম অর্জনের জন্য নির্ধারণ করবে না। যে সময়ে মস্তিষ্ক নিস্তেজ থাকে, বোধশক্তি দুর্বল থাকে সে সময় ইল্‌ম অর্জনের জন্য উপযুক্ত নয়। এই সময়কে ইল্‌ম অর্জনের জন্য নির্ধারণ মানে নিজের সাথে প্রবঞ্চনা করা। অতএব ইল্‌মের জন্য সবচেয়ে উত্তম সময় ব্যয় করতে হবে। যে সময় মস্তিষ্ক সতেজ থাকে, পরিচ্ছন্ন থাকে, ঝঞ্ঝাট মুক্ত থাকে। এটি তখনই সম্ভব হয়, যখন তালিবে ইল্‌ম ইল্‌ম অর্জনের প্রতি তীব্র আগ্রহী হয়। সকালসন্ধ্যা তার মস্তিষ্ক শুধু ইল্‌ম নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তার লক্ষ্য শুধু ইল্‌ম। ঘুমাতে গেলে তার পাশে কিতাব থাকে। হয়তবা ঘুম আসার আগে কোনো মাসআলা জানার জন্য কিতাবের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য জনৈক আলেম বলেন: যদি তুমি দেখতে পাও তালিবে ইল্‌মের বইপুস্তক সাজানো গুছানো তাহলে জেনে রাখ সে কিতাব পুস্তক অধ্যয়ন করে না। তুমি যদি আকস্মিকভাবে কারো পাঠাগারে ঢুকে পড় আর দেখতে পাও তার কিতাবপুস্তক সাজানো গুছানো, কিতাবগুলো স্ব স্ব স্থানে শোভা পাচ্ছে এর মানে হলো- তিনি অধ্যয়ন করেন না। মেজেতে কোন কিতাব পড়ে নেই, তার পাশেও কোনো কিতাব নেই, টেবিলের উপরও কোনো কিতাব নেই। এর মানে হচ্ছে- সে কর্মব্যস্ত কিছু সংস্কৃতিমনা মানুষের অন্তর্ভুক্ত যারা তাদের কিছু সময়কে তাদের পড়ার জন্য নির্দিষ্ট করে রাখেন। তালিবে ইল্‌মের নিকট পড়ার সময় বলে কিছু নেই। তালিবে ইল্‌মের সবটুকু সময় ইল্‌ম হাছিলের জন্য। সকাল-সন্ধ্যা সারাক্ষণ তার মনমস্তিষ্ক ইল্‌ম নিয়ে মশগুল। তার জীবনের প্রধান সময় যৌবনকাল। এই সময়ে তিনি ইল্‌মের প্রতি প্রচণ্ড আসক্ত থাকেন। তিনি তার সময়গুলোকে ইল্‌মের জন্য ভাগ করে নেন। দিনের সবচেয়ে উত্তম সময়, যে সময় মস্তিষ্ক সবল থাকে সে সময়ে তিনি ফিকহ (ইসলামি আইন) ও উসুলুল ফিকহ (ফিকহের মূলনীতি) ইত্যাদি বিষয় অধ্যয়ন করেন। কারণ এ জাতীয় বিষয়গুলো বুঝতে মস্তিষ্কের উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়। মধ্যম মানের সময়ে তিনি তাফসির, হাদিস, হাদিসের পরিভাষা ইত্যাদি বিষয় অধ্যয়ন করেন। যে বিষয়গুলো বুঝতে মস্তিষ্কের উপর অতবেশী চাপ পড়ে না। আর যে সময়ে মস্তিষ্ক দুর্বল থাকে সে সময়ে তিনি সাহিত্য, জীবনচরিত, ইতিহাস, সাধারণ জ্ঞানের বইগুলো অধ্যয়ন করেন। অর্থাৎ তালিবে ইল্‌ম সারাক্ষণ ইল্‌ম নিয়ে ব্যস্ত। যেখানেই থাকুক না কেন তার কর্মব্যস্ততা হলো ইল্‌ম নিয়ে। কোন বিনোদন বা খোশ আলাপ তাকে ইল্‌ম অর্জন থেকে বিরত রাখে না। এ কারণে আমরা দেখতে পাই, আজকাল যাদেরকে তালিবে ইল্‌ম বলা হয় তাদের সবচেয়ে বড় দোষ হলো- তারা ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটায় অনর্থক কথাবার্তায়, গালগপ্পে। যেগুলোর সাথে ইল্‌মের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। এই যার অবস্থা সে তালিবে ইল্‌ম নয়; বরং অন্যকিছু। যে কাজ নিয়ে সে ব্যস্ত সেটাই তার পরিচয় হওয়া উচিত। পক্ষান্তরে তালিবে ইল্‌ম তার আত্মপ্রশান্তি, তার শখ, তার আকাঙ্ক্ষা সবকিছু হচ্ছে ইল্‌মকে নিয়ে। যে মজলিসে ইল্‌ম নিয়ে আলোচনা হয় অথবা আল্লাহর অবতীর্ণ কালাম নিয়ে আলোচনা হয় অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী নিয়ে আলোচনা হয় সে মজলিসে গেলে তালিবে ইল্‌মের আত্মা সুপ্রসন্ন হয়, মনে তৃপ্তি আসে। সুতরাং তালিবে ইল্‌মের বৈশিষ্ট হবে- নিরবিচ্ছিন্ন অধ্যবসায়। তালিবে ইল্‌ম ইল্‌ম হাছিলের জন্য তার যৌবনকালের কিছু সময় নয়; সবটুকু সময় ব্যয় করবে অথবা অধিকাংশ সময় ব্যয় করবে। যেহেতু যৌবনকাল ইল্‌ম হাছিলের উপযুক্ত সময়। এ কারণে পূর্ববর্তী কোনো এক আলেম বলেছেন: “তোমার সবটুকু তুমি ইল্‌মকে দান করো; তাহলে ইল্‌ম তোমাকে সামান্য কিছু দান করবে।” কারণ ইল্‌ম অনেক বিস্তৃত, অনেক প্রশস্ত। তাইতো জনৈক মুহাদ্দিস মৃত্যু শয্যায় থেকে একটি হাদিস বর্ণনা করেন এবং তাঁর অনুলেখককে নির্দেশ দেন: লিখে রাখ। মৃত্যুর এই কঠিন মূহূর্তেও তিনি ইল্‌ম বিতরনে আগ্রহী ছিলেন। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি ইল্‌ম বিতরণে তিনি কতবেশী মুখলিস (একনিষ্ঠ) ছিলেন। তাঁর গোটা অন্তর ইল্‌মের মহব্বতে ভরপুর ছিল। ইমাম আহমাদ রাহেমাহুল্লাহ যখন মৃত্যু শয্যায় ছিলেন তখন ব্যথায় কাতর হয়ে তিনি কিছুটা কাতরাচ্ছিলেন। তখন তাঁর জনৈক ছাত্র মুহাম্মদ ইবনে সীরিনের সনদে আনাস ইবনে মালিক থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি কাতরানোকে অপছন্দ করতেন। বর্ণনাকারী বলেন: এরপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইমাম আহমাদকে আর কাতরাতে শুনা যায়নি। এই মনমানসিকতা যদি তালিবে ইল্‌মের মধ্যে থাকে তাহলে সে তালিবে ইল্‌ম ভবিষতে উম্মতের কল্যাণকামী আলেমে দ্বীন হতে পারবে- ইনশাআল্লাহ্‌। রাতদিন তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবে শুধু ইল্‌মকে ঘিরে। ছোটবড় সবার কাছ থেকে সে শিখবে। কোনো ইল্‌মকে সে তুচ্ছ মনে করবে না। কিছু মানুষ আছে এমন যখন তার চেয়ে কম মর্যাদার কেউ একজন কোনো একটি উপকারী বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চায় তখন সে আত্মম্ভরিতা করে এবং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে না। এটি এ কারণে যে, সে ব্যক্তি নিজেকে ইল্‌মের চেয়ে বড় মনে করে। যে ব্যক্তি ইল্‌মের চেয়ে নিজেকে বড় মনে করে সে ইল্‌ম হাছিল করতে পারবে না। হতে পারে কম মর্যাদার কারো কাছে এমন একটি ইল্‌ম আছে বড় মর্যাদার কারো নিকট সে ইল্‌মটি নেই। হতে পারে কোনো একটি ইল্‌ম ছোট্ট একজন তালিবে ইল্‌ম বুঝতে পেরেছে; অথচ বড় কোনো আলেম সে ইল্‌মটি বুঝতে পারেনি। ছোট্ট ছাত্রটি যখন সে জ্ঞানটি বুঝিয়ে বলে তখন বড় আলেমেরও বুঝে আসে। এ প্রসঙ্গে আলেমগণ সুলাইমান আলাইহিস সালামের সাথে হুদহুদ পাখির ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে পেশ করেন। হুদহুদ পাখির মর্যাদাগত ও সৃষ্টিগত অবস্থান নিম্ন পর্যায়ের হওয়া সত্ত্বেও এবং নবী সুলাইমান আলাইহিস সালামের মর্যাদা অনেক উন্নত হওয়া সত্ত্বেও সুলাইমান আলাইহিস সালামকে লক্ষ্য করে হুদহুদ পাখি বলে:
﴿فَقَالَ أَحَطتُ بِمَا لَمۡ تُحِطۡ بِهِۦ وَجِئۡتُكَ مِن سَبَإِۢ بِنَبَإٖ يَقِينٍ ٢٢ ﴾ [النمل: ٢٢] 
“অতঃপর হুদহুদ এসে বলল: আপনি যা অবগত নন, আমি তা অবগত হয়েছি। আমি আপনার কাছে সাবা থেকে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি।” [সূরা নমল, আয়াত ২৭:২২] হুদহুদ পাখি যা জেনেছে সুলাইমান আলাইহিস সালাম তা জানতেন না। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আলেমগণ বলেন: ছোট হোক, বড় হোক যে ব্যক্তি তোমার নিকট কোন জ্ঞান নিয়ে আসবে তার সাথে আত্মম্ভরিতা করবে না। যে ব্যক্তি জ্ঞান নিয়ে এসেছে তুমি মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুন। কারণ হতে পারে সে তোমার জন্য নতুন কোন জ্ঞানের ফটক উন্মুক্ত করে দিবে। 

এই তিনটি তালিবে ইল্‌মের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এ রকম আরো অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা বলেছি আপনি সেগুলো এ বিষয়ে রচিত গ্রন্থাবলী থেকে জেনে নিতে পারবেন...চলবে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন