মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৩

নৈতিকতার সমন্বয়ে উচ্চশিক্ষিত জাতি গঠনে আই ইউ সি


               
                                                                                                                                                

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সাধারনত সবাই যে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন তার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আই আই ইউ সি) এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো যথাসময়ে ও যথানিয়মে কোর্স সম্পন্ন করা,পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরিচালীত হয়। ছাত্র /ছাত্রীরা যাতে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকে এ বিষয়টিও খুবই গুরূত্ব সহকারে দেখেন এ বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষকরাও সব সময় চেষ্টা করেন কোর্সগুলো যথাসময়ে শেষ করে দিতে। আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি ও নিয়ামানুবর্তীতার কারণে সাফল্য ধরে রেখেছে আই আই ইউ সি। তাছাড়া লেখাপড়ার খরচ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক কম। আন্তর্জাতিক ডিগ্রিধারী শিক্ষক এবং অধিকাংশ শিক্ষক পূর্ণকালের জন্য নিয়োজিত থাকায় শির্ক্ষাথীরা সহজেই সুশিক্ষা অর্জন করতে পারে। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,বুদ্ধিজীবী,ইসলামী চিন্তাবিদ ও সমাজকর্মীরা মিলিত হয়ে ১৮৬০ সালে সোসাইটি এ্যাক্ট-২১ এর আওতায় ‘চট্টগ্রাম ট্রাস্ট’ নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন। এদের আন্তরিক প্রয়াসে ১৯৯৫ সালের ১১ ফেব্র“য়ারী দেশব্যপি উন্নত উচ্চশিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রামে আত্মপ্রকাশ ঘটে আজকের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম( আই আই ইউ সি) প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি শ্বাশ্বত মূল্যবোধ ও আধুনিক বিজ্ঞানের সমন্বয়ে প্রণীত শিক্ষা কর্মসূচির আলোকে দেশে প্রজন্ম পরম্পরায় সুশিক্ষিত,চরিত্রবান,সৎ, যোগ্য ও সুন্দর মানসিকতা সম্পন্ন দেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ নাগরিক তৈরি করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে ২০০০ সালের জানুয়ারী মাসে ধানমন্ডির ২ও ৩ নাম্বার রোডে ছাত্রীদের জন্য পৃথক ক্যাম্পাস সহ সর্বমোট চারটি ভবন প্রতিষ্ঠা করা হয়। চট্টগ্রামের কুমিরায় রয়েছে প্রতিটি ফ্যাকাল্টির জন্য পৃথক পৃথক ভবন নিয়ে বিলাসবহুল স্থায়ী ক্যাম্পাস। চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র চকবাজারেও রয়েছে সিটি ক্যাম্পাস, সবচেয়ে বড় কথা হলো মহিলাদের থাকা-খাওয়া সহ লেখাপড়ার জন্য রয়েছে স¤পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ও যুগপযোগী বিভিন্ন বিষয়ে øাতক ও øাতকোত্তর,এমফিল,পিএইচ ডি, কোর্স চালু আছে। স্বনামধন্য শিক্ষকদের বন্ধুসূলভ আচরণ সকল শিক্ষার্থীকে জ্ঞান অর্জনের জন্য অনুপ্রেরনা যোগায়। এখানে পড়াশুনার মান অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশ এগিয়ে। অত্যাধুনিক ল্যাব,ইন্টারনেট, আন্তর্জাতিক মানসম্মত বিলাসবহুল লাইব্রেরীর সুবিধা সহ বিভিন্ন সুবিধার কারণে ছাত্র/ছাত্রীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়ে এখানে চলে আসে। কেননা অনেক ক্ষেত্রে আই আই ইউ সি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেও হার মানায়। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি,হানাহানি সহ সেশনজটতো আছেই। আমি যখন কোথাও যাওয়ার জন্য বের হই তখন সাধারনত অনুভব করি সময়ের মূল্যটা। কেননা ট্রাফিক সমস্যা আমাদের জাতীয় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা আমাদেরকে রাজপথে অপেক্ষা করতে হয়। যেখানে এক মিনিট অপেক্ষা করাটা কষ্টকর সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা চলে গেলেও অপেক্ষা করতে হবে। কিছু করার নেই,বলার নেই। তখনি আমার মনে পড়ে আমার শ্রদ্ধেয় আব্বুর বার বার দেওয়া সেই উপদেশ- সময় আর নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। অনুরূপ আরেকটি সমস্যা হলো ছাত্রজীবনে সেশনজট। এক সাথে দু’জন ছাত্র যদি একজন পাবলিকে আরেকজন প্রাইভেটে ভর্তি হয় তাহলে দেখা যাবে যখন প্রাইভেটের ছাত্রটা মাস্টার্স কমপ্লিট করলো তখন পাবলিকের ছাত্রটা সেকেন্ড কিংবা থার্ড  ইয়ারের চেয়ে বেশি এগুতে পারেনি। এ রকম শত সহস্র ছাত্র / ছাত্রীরা  আটকে যাচ্ছে এই সেশনজটের নিষ্ঠুর আবর্তে। হতাশ হয়ে যাচ্ছে মা-বাবা। ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স পর্যন্ত চলে যাচ্ছে  কিন্তু এখনো পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ হয়নি। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে জটিলতা, অর্থনীতিবীদরা বলেছেন তাদের কথা, রাজনীতিবীদরা আদায় করেছেন তাদের অধিকার। আর এই অধিকার আদায় করতে গিযে কতো ভাঙচুর কতো আন্দোলন আরো কতো  কি?  এভাবে নানা আন্দোলন সহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ছাত্র/ছাত্রীরা আটকে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের  এই সেশনজটে। যা আই আই ইউ সিতে কল্পনাও করা যায়না। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটের নানা করূণ কাহিনী। ১-ঢাবিতে সেশনজট সাড়ে তিন বছর:গড় আড়াই বছর ২-চবিতে দেড় থেকে তিন বছর গড়ে সোয়া দুই বছর ০৩-শাবিতে দেড় থেকে তিন বছর গড়ে আড়াই বছর।০৪-রাবিতে প্রায় দুই বছর। ৫-জাবিতে প্রায় চার বছর। ০৬-ইবিতে দেড় থেকে তিন বছর।০৭-জগন্নাথে দেড় থেকে দুই বছর।০৮- আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন বছর। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা আরো বাড়াতে হবে এবং আরো মান সম্মত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি। কেননা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালযের ভুমিকা অনম্বিকার্য। আমি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে মেধাবীদের জন্য আশির্বাদ বলে মনে করি। অবশ্যই এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলি যাতে বাণিজ্যমুখি না হয় সে দিকেও সরকারকে নজর রাখতে হবে। যাতে ইচ্ছে মতো ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিতে না পারে  সে দিকে অবশ্যই সরকারকে সচেতন হতে হবে।  অনুমোদন দিয়েই সরকারের দায়িত্ব শেষ নয়। কেননা অনেক প্রইভেট বিশ্ববিদ্যালয় দেখা যায় একটা বাড়ি ভাড়া করে শুরু করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্য। তাছাড়া ছাত্রদের জন্য সবচেয়ে বড় অভিশাপ বলে আমি মনে করি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু হতে প্রায় অনর্থক একটা বছর চলে যাওয়া । রেজাল্ট বের হওয়ার পর ভর্তি শুরু করে দিলে সমস্যা কোথায়? এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি দোষারূপ করা যায় সরকারের অনিচ্ছাকে।

1 টি মন্তব্য: