আমার পরিচিত এক ভদ্রলোক। বাড়ি চট্টগ্রামে। জাহাজে বিভিন্ন জিনিসপত্র
সরবরাহের ব্যবসা করেন। কিন্তু জীবন শুরু করেছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের একজন
সাধারণ শ্রমিক হিসেবে। এক সময় সেই চাকরিটিও চলে যায়। তখন ‘নলিশাহ’ হুজুরের
মাজারের নামে রসিদ বই ছাপিয়ে চাঁদা তোলা শুরু করেন। নলি শাহ নামটি তারই
দেয়া। নলি হলো খাদ্যনালী। নিজের গায়ের শ্রম দিয়ে যতটুকু আয় করতেন সামান্য
বুদ্ধি খাটিয়ে আয় করলেন তার চেয়ে দশগুণ। তার তৃপ্তিটি হলো তিনি তার ঈমান
নষ্ট করেননি। নিজের খাদ্যনালীর সেবার কথা জানিয়েই তিনি অন্য শ্রমিকদের কাছ
থেকে চাঁদা তুলেছেন। সেই টাকা নলিশাহ অর্থাত্ নিজের খাদ্যনালীর কাছেই
যথাযথভাবে অত্যন্ত ঈমানদারীর সঙ্গে পৌঁছে দিয়েছেন।
বিদেশ বিভূইয়ে সব হারিয়ে এই ভদ্রলোক নলিশাহর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সব জায়গায় ধরা খাওয়া বর্তমান সরকারও তেমনি এক ‘নলিশাহ’কে খুঁজছিল। শাহবাগ চত্বরে সরকার যেন সেই নলিশাহকেই খুঁজে পেয়েছে। নিজের খাদ্যনালীর সেবায় এই নলিশাহকে নিয়োজিত করলেও সরকার ও সরকারবান্ধব দেশের অধিকাংশ মিডিয়া ছড়াচ্ছে এই ‘নলিশাহ’ অত্যন্ত কামেলে পীর। খুবই জাদরেল ও অত্যন্ত গরম পীর শাহবাগের এই নলিশাহ।
শাহবাগ চত্বরে এমনি এক অভিনব শিশুর জন্ম হয়। এমন রহস্যময় শিশু বাংলাদেশে আর কখনোই জন্মগ্রহণ করেনি। শিশুটির হাত পা মুখে বামপন্থীদের চেহারাটিই বেশি স্পষ্ট হয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ শিশুটিকে অত্যন্ত আহ্লাদের সঙ্গেই নিজের কোলে তুলে নিয়েছে। জন্ম প্রক্রিয়ায় যেই থাকুক না কেন, এখন পিতৃস্নেহের বড় চুম্বনটি পড়ছে আওয়ামী লীগের ঠোঁট থেকে। আকিকা করে নাম রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। পাকিস্তান গন্ধযুক্ত শাহবাগ স্কয়ার নাম বদলিয়ে এখন রাখা হয়েছে প্রজন্ম চত্বর।
শাহবাগ চত্বরের এ শিশুটিকে এখন অত্যন্ত ‘গরম পীর’ বানিয়ে ফেলেছে এদেশের মিডিয়া। শাহবাগ চত্বরের নির্দেশ পীরের নির্দেশ হিসেবে গণ্য করছে পুরো দেশ। রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান ধরনের কেউ না হলেও জনৈক ডাক্তার ইমরানের কথা মতোই এদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকাটি উঠছে ও নামছে। রাষ্ট্রের পুরো নির্বাহী বিভাগ আজ ডা. ইমরানের অঙ্গুলি হেলনে উঠছে বসছে। কোন অথরিটিতে স্বাচিপ নেতা ডা. ইমরান এ নির্দেশ দিচ্ছেন এই প্রশ্নটি কারও মাথায় ঢুকছে না। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আমরা কতটুকু দেউলিয়া ও পঙ্গু হয়ে পড়েছি এ ঘটনাটিই তার বড় প্রমাণ। একজন রাষ্ট্রপ্রধানের গুরুত্ব দিয়ে টিভি চ্যানেলগুলো তার ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করছে। এই শিশু-পীরের ইমেজ তৈরিতে মুরিদ কিংবা এজেন্টের ভূমিকাটি পালন করছে বলতে গেলে দেশের তাবদ মিডিয়া। তাদের সবচেয়ে বড় ও সফল ‘শিশু-পীর’ প্রজেক্টটি হলো প্রজন্ম চত্বর।
এই শিশু-পীরটির জন্য বিশেষ সমীহ সবার কাছ থেকে আদায় করে ফেলেছে। এই শিশু পীরের মুরিদ বা সাগরেদ হয়েছেন বিশেষ ঘরানার তাবদ সাংস্কৃতিক জগত্। এই চত্বরটিতে গিয়ে একে একে আনুগত্য প্রকাশ করে এসেছেন বা বাইয়াত গ্রহণ করেছেন দেশের তাবদ বুদ্ধিজীবীকুল। তবে এই শিশু-পীরের সামনে আদব-লেহাজ না দেখিয়ে সবচেয়ে বড় বেয়াদবিটি করেছেন আমার দেশ ও তার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। কাজেই কাদের মোল্লার ফাঁসির কথা ভুলে এ শিশু-পীর মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার চেয়েছে। গ্রেফতারের পর উল্লাসও প্রকাশ করেছে।
বোধগম্য কারণেই এই শিশু পীরের বিশেষ মুরিদ সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। শাহবাগ আন্দোলনের যারা বিরোধিতা করেন সেসব সাংবাদিকের সঙ্গে এক সঙ্গে থাকাকে অসম্ভব মনে করেছেন। হিতাহিত জ্ঞান ভুলে জনাব মাহমুদুর রহমানকে কুলাঙ্গার সাংবাদিক বলে গালি দিয়েছেন। যা পুরো জাতিকে স্তম্ভিত ও হতবাক করে দিয়েছে। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এরা আসলেই ব্যাংকরাপসি বা পুরো দেউলিয়া বনে গেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামির প্রতিক্রিয়া প্রকাশ অত্যন্ত স্বাভাবিক। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ফাঁসির রায় শুনে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন ও মুনতাসির মামুন বলেন, কুত্তার বাচ্চা থাম ...’।
পাঠক চিন্তা করুন, সাদ্দাম হোসেন এক সময় পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন। সেই সাদ্দামকেও ফাঁসিরকাষ্ঠে মানসিকভাবে কষ্ট দিলে পুরো পৃথিবীর মানুষ খেপে যায়। কাজেই আমরা এ কোন সমাজে বসবাস করছি? যাদের একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে মেনে নিতে কষ্ট হয় তারাই হয়েছেন সাংবাদিক সমাজের নেতা। তারাই হয়েছেন দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি!
সরকারের ভাবখানা এমন যে এই শিশু পীরের নির্দেশ না মেনে উপায় নেই। কিছু কাজ সরকার করে ফেললে প্রশ্নের সম্মুখীন হতো। এখন এই শিশু পীরের নির্দেশে করেছে বলে সেই ভয় সরকারের মধ্যে নেই। এই শিশু পীরকে পেয়ে আন্তর্জাতিক কমিউনিটির ভয়, বিবেকের তাগিদ সব উবে গেছে সরকারের মন থেকে। এই শিশুটির জন্মদাতার পরিচয় নিয়ে আগে একটু রাখ ঢাক ছিল। ভারতের বহুল প্রচারিত পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়ে দিয়েছে এর পেছনে স্বয়ং ভারত। ভারতের পত্রিকা এই সাহসটি করলেও আমার দেশ ও দু-একটি পত্রিকা ছাড়া অন্য কোনো বাংলাদেশী পত্রিকা এই সাহসটি করেনি।
আমেরিকা প্রবাসী এক বন্ধু ই-মেইলে আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, কিছুদিন আগে মনে হতো সব পত্র-পত্রিকা সরকারের বিরুদ্ধে। এখন মনে হচ্ছে সবাই সরকারের পক্ষে। এটা একটা বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। কোন পত্রিকা দেশের কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে সমর্থন করবে, কিংবা কোন দলের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন হবে এটা অস্বাভাবিক কিছু না। প্রায় সব দেশেই এটা দেখা যায়। কিন্তু এদেশের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
প্রতিবেশী একটি দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের বড় রক্ষক হয়ে পড়েছে এদেশের মিডিয়ার বড় একটা অংশ। ইকনোমিস্ট আমাদের চোখ কিছুটা খুলে দিয়েছিল তাদের টাকা ও উপদেশের থলির ব্যাপারে। এ থলেগুলোর বড় প্রাপক সম্ভবত এদেশের মিডিয়া। পশ্চিমবঙ্গের মতো সচেতন সমাজে যেখানে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি পত্রিকা সেখানে আমাদের দেশে এতগুলো রং-বেরঙের পত্রিকা মনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করে। পাঠকদের চাহিদার চেয়ে এখানে অন্য কোনো চাহিদাটিই স্পষ্ট হয়ে পড়ে।
দেশের মানুষকে বোকা বানানোর নিমিত্তে এ পত্র-পত্রিকাগুলোকে তিনটি স্তরে রাখা হয়েছে। প্রথম স্তরে অন্ধ সমর্থক কিছু পত্রিকা। এ পত্রিকার লেখাগুলো অন্ধ সমর্থকদের জন্য উপাদেয়। অপেক্ষাকৃত বুদ্ধিমান সমর্থকদের জন্য রয়েছে দ্বিতীয় সারিতে রাখা কিছু পত্রিকা। এরা পছন্দের দলের বা সরকারের সমালোচনা করে। তবে বড় ধরনের বা স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে কি না সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখে। তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে তথাকথিত নিরপেক্ষ পত্রিকা। এদের অনেক অবকাশ দেয়া থাকে। আবদুল গাফফার চৌধুরীর মতো কাউকে দিয়ে মাঝে মাঝে গালি দেয়ানো হয়। এদের মূল মিশনটি হলো বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করা। প্রিয় দল বা সরকারের সমর্থন ও সমালোচনার মাত্রায় এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু একটি জায়গায় এদের মধ্যে চমত্কার মিল রয়েছে। এরা কখনোই তাদের প্রিয় দেশটির কর্মকাণ্ড বা স্বার্থের বিরুদ্ধে মুখ খুলে না।
কাজেই টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদকে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকাগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি। দেশের মানুষ জানেও না যে কী ভয়ঙ্কর পত্রিকাগুলোকে তাদের অজ্ঞতায় দেশের এলিট পত্রিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। ঝকমকে তকতকে ছুরিগুলো দিয়ে কীভাবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের গলায় ছুরি চালাচ্ছে। আমরা এখনও বাসায় বা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দৈনিক পত্রিকা রাখি নিজেকে উদার বা নিরপেক্ষ পরিচয় দেয়ার মানসে। পাছে লোকে কিছু বলে এই তাড়ায় তাড়িত দেশের শিক্ষিত সমাজের বড় অংশ। বিএনপির নেতাকর্মী বা সমর্থকদের মধ্যে এ তাড়াটি কেন যেন আরও বেশি করে কাজ করে। একটা জায়গা থেকে সচেতনভাবে এ হীনম্মন্যটুকু ঢুকিয়ে দেয়া হয়। সেই টেকনিকটি এখন কিছুটা অকার্যকর হয়ে পড়ছে দেখে এদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যেসব পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল এ ব্যাপারে মানুষের চোখ খুলে দিচ্ছে তাদের প্রতি চোখ লজ্জা ভুলে প্রকাশ্যে নেমেছেন।
এ স্বার্থের সবচেয়ে বড় হুমকি হলো মাত্র গুটিকয়েক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠান। শফিক রেহমানের হাত থেকে তার নিজের সৃষ্টি যায়যায়দিন পত্রিকাটি কেড়ে নেয়া হয়েছে। এখন সামনে পড়েছেন একমাত্র মাহমুদুর রহমান। তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের বিপরীতে মাহমুদুর রহমান যে জাগরণের ডাক দিয়েছেন তাকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মোকাবিলা করা এই শক্তিটির জন্য আসলেই কঠিন হয়ে পড়েছে।
মাহমুদুর রহমানের প্রতি প্রজন্ম চত্বরের গালি, সরকারের গালি এবং ইকবাল সোবহানদের গালি এখন একাকার হয়ে গেছে। সাগর-রুনির হত্যার বিচারকে সামনে নিয়ে বিভক্ত সাংবাদিক সমাজ এক হয়েছিলেন। সেই নেতাদের লিস্ট দেখে তখনই এ আন্দোলন কতটুকু সফল হবে তা স্পষ্ট হয়ে পড়েছিল। টক-দই ওয়ালার প্রতি তর্জন-গর্জন যতটুকু দেখা গেছে, তাতে দইয়ের টকত্বে কোনো হেরফের হয়নি। সাংবাদিকদের প্রফেশনাল হ্যাজার্ড আজ বহুগুণে বেড়ে গেছে। চোখে যা দেখা যাবে, হৃদয়ে যা অনুভব করা যাবে তা বলা যাবে না, লেখা যাবে না। দালালি করলে কোনো কথা নেই কিন্তু সাংবাদিকতা করতে গেলেই কুলাঙ্গার হয়ে পড়তে হবে। মনে হচ্ছে সেই কুলাঙ্গার হওয়ার দৃঢ প্রত্যয়ই গ্রহণ করেছেন সময়ের সাহসী সন্তান মাহমুদুর রহমান।
পৃথিবীর সব দেশে সাংস্কৃতিক জগত্, মিডিয়া জগত্ ও বুদ্ধিবৃত্তিক জগত্ থাকে সব সময় ন্যায়ের পক্ষে। মুক্ত চিন্তার পক্ষে, মানবতার পক্ষে। কিন্তু আমাদের দেশে ভিন্ন চিত্র। পদ্মা সেতুর মহাদুর্নীতি নিয়ে যখন মিডিয়ার ব্যস্ত থাকার কথা, তখন তারা লেগেছে এই শাহবাগ চত্বর নিয়ে। কাদের মোল্লার কথা স্মরণ হয়েছে তাতে দোষ নেই। কিন্তু আবুলদের কথা কেন মনে পড়ল না তা বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। যেখানে কচি বাচ্চাদের কচিকণ্ঠে জবাই করার কথা, ফাঁসির কথা তুলে দেয়া হয়েছে। হলমার্ক, ডেসটিনি, কুইক রেন্টাল প্রভৃতি চলে গেছে অনেক পেছনে। চরম ধর্মদ্রোহী শক্তি, দুর্নীতিবাজ অপশক্তি এবং সাংস্কৃতিক-মিডিয়া-বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের মধ্যে এক অশুভ আঁতাত দেখা গেছে এ শাহবাগ চত্বরে। এ চত্বর থেকে একবারও এসব মহাদুর্নীতির কথা উচ্চারিত হয়নি। সিংহের বাচ্চার মতো এই কথা উচ্চারণ করেছেন মাহমুদুর রহমান। এটাই তার বড় অপরাধ।
হাইকোর্টের এক বিচারপতি তাকে অভিহিত করেছিলেন ‘চান্স’ সম্পাদক হিসেবে। হাতে কিছু টাকা এবং মনে সামান্য শখ থাকলে যে কেউ সম্পাদক হওয়ার সুযোগ বা চান্সটি গ্রহণ করতে পারেন। তবে বিচারালয় থেকে শুরু করে সমাজের অন্যান্য আলয়কে এমনভাবে নাড়া দিতে পারেন না। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরী তাকে ‘কুলাঙ্গা’ র বলে গালি দিয়েছেন। সাংবাদিক নেতা হয়ে অন্য একজন পত্রিকার সম্পাদককে কুলাঙ্গার ডাকার মতো বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াপনা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। রিকশাওয়ালা, শ্রমিক এদের শব্দের ভাণ্ডার সীমিত। কারও প্রতি রেগে গেলে এদের মুখ থেকে সহজেই গালি বের হয়ে পড়ে। নিজের ক্রোধ ও হতাশা প্রকাশ করার জন্য এমনই শব্দ সঙ্কটে ভুগছেন ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মতো সাংবাদিক নেতা, ড. আনোয়ার হোসেন ও মুনতাসির মামুনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শিক্ষক।
মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তবুদ্ধির চেতনা ধারণ করাতে এরা সব সভ্যতা ও ভব্যতার ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন। নজরুলের একটি লেখায় পড়েছিলাম, মুয়াজ্জিন যে কেউ হতে পারেন কিন্তু ইমাম হন আল্লাহর ইচ্ছায়। নজরুলের সেই কথা ধরেই বলতে হয়, ইকবাল সোবহান যে কেউ হতে পারেন কিন্তু মাহমুদুর রহমান হন সম্ভবত আল্লাহর ইচ্ছায়। ইঁদুরের ছানা যে কেউ হতে পারে কিন্তু সিংহের বাচ্চা হয় আল্লাহর ইচ্ছায়। (দৈনিক আমার দেশ,২১ এপ্রিল ২০১৩ থেকে সংকলিত) minarrashid@yahoo.com
বিদেশ বিভূইয়ে সব হারিয়ে এই ভদ্রলোক নলিশাহর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সব জায়গায় ধরা খাওয়া বর্তমান সরকারও তেমনি এক ‘নলিশাহ’কে খুঁজছিল। শাহবাগ চত্বরে সরকার যেন সেই নলিশাহকেই খুঁজে পেয়েছে। নিজের খাদ্যনালীর সেবায় এই নলিশাহকে নিয়োজিত করলেও সরকার ও সরকারবান্ধব দেশের অধিকাংশ মিডিয়া ছড়াচ্ছে এই ‘নলিশাহ’ অত্যন্ত কামেলে পীর। খুবই জাদরেল ও অত্যন্ত গরম পীর শাহবাগের এই নলিশাহ।
শাহবাগ চত্বরে এমনি এক অভিনব শিশুর জন্ম হয়। এমন রহস্যময় শিশু বাংলাদেশে আর কখনোই জন্মগ্রহণ করেনি। শিশুটির হাত পা মুখে বামপন্থীদের চেহারাটিই বেশি স্পষ্ট হয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ শিশুটিকে অত্যন্ত আহ্লাদের সঙ্গেই নিজের কোলে তুলে নিয়েছে। জন্ম প্রক্রিয়ায় যেই থাকুক না কেন, এখন পিতৃস্নেহের বড় চুম্বনটি পড়ছে আওয়ামী লীগের ঠোঁট থেকে। আকিকা করে নাম রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। পাকিস্তান গন্ধযুক্ত শাহবাগ স্কয়ার নাম বদলিয়ে এখন রাখা হয়েছে প্রজন্ম চত্বর।
শাহবাগ চত্বরের এ শিশুটিকে এখন অত্যন্ত ‘গরম পীর’ বানিয়ে ফেলেছে এদেশের মিডিয়া। শাহবাগ চত্বরের নির্দেশ পীরের নির্দেশ হিসেবে গণ্য করছে পুরো দেশ। রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান ধরনের কেউ না হলেও জনৈক ডাক্তার ইমরানের কথা মতোই এদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকাটি উঠছে ও নামছে। রাষ্ট্রের পুরো নির্বাহী বিভাগ আজ ডা. ইমরানের অঙ্গুলি হেলনে উঠছে বসছে। কোন অথরিটিতে স্বাচিপ নেতা ডা. ইমরান এ নির্দেশ দিচ্ছেন এই প্রশ্নটি কারও মাথায় ঢুকছে না। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আমরা কতটুকু দেউলিয়া ও পঙ্গু হয়ে পড়েছি এ ঘটনাটিই তার বড় প্রমাণ। একজন রাষ্ট্রপ্রধানের গুরুত্ব দিয়ে টিভি চ্যানেলগুলো তার ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করছে। এই শিশু-পীরের ইমেজ তৈরিতে মুরিদ কিংবা এজেন্টের ভূমিকাটি পালন করছে বলতে গেলে দেশের তাবদ মিডিয়া। তাদের সবচেয়ে বড় ও সফল ‘শিশু-পীর’ প্রজেক্টটি হলো প্রজন্ম চত্বর।
এই শিশু-পীরটির জন্য বিশেষ সমীহ সবার কাছ থেকে আদায় করে ফেলেছে। এই শিশু পীরের মুরিদ বা সাগরেদ হয়েছেন বিশেষ ঘরানার তাবদ সাংস্কৃতিক জগত্। এই চত্বরটিতে গিয়ে একে একে আনুগত্য প্রকাশ করে এসেছেন বা বাইয়াত গ্রহণ করেছেন দেশের তাবদ বুদ্ধিজীবীকুল। তবে এই শিশু-পীরের সামনে আদব-লেহাজ না দেখিয়ে সবচেয়ে বড় বেয়াদবিটি করেছেন আমার দেশ ও তার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। কাজেই কাদের মোল্লার ফাঁসির কথা ভুলে এ শিশু-পীর মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার চেয়েছে। গ্রেফতারের পর উল্লাসও প্রকাশ করেছে।
বোধগম্য কারণেই এই শিশু পীরের বিশেষ মুরিদ সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। শাহবাগ আন্দোলনের যারা বিরোধিতা করেন সেসব সাংবাদিকের সঙ্গে এক সঙ্গে থাকাকে অসম্ভব মনে করেছেন। হিতাহিত জ্ঞান ভুলে জনাব মাহমুদুর রহমানকে কুলাঙ্গার সাংবাদিক বলে গালি দিয়েছেন। যা পুরো জাতিকে স্তম্ভিত ও হতবাক করে দিয়েছে। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এরা আসলেই ব্যাংকরাপসি বা পুরো দেউলিয়া বনে গেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামির প্রতিক্রিয়া প্রকাশ অত্যন্ত স্বাভাবিক। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ফাঁসির রায় শুনে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন ও মুনতাসির মামুন বলেন, কুত্তার বাচ্চা থাম ...’।
পাঠক চিন্তা করুন, সাদ্দাম হোসেন এক সময় পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন। সেই সাদ্দামকেও ফাঁসিরকাষ্ঠে মানসিকভাবে কষ্ট দিলে পুরো পৃথিবীর মানুষ খেপে যায়। কাজেই আমরা এ কোন সমাজে বসবাস করছি? যাদের একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে মেনে নিতে কষ্ট হয় তারাই হয়েছেন সাংবাদিক সমাজের নেতা। তারাই হয়েছেন দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি!
সরকারের ভাবখানা এমন যে এই শিশু পীরের নির্দেশ না মেনে উপায় নেই। কিছু কাজ সরকার করে ফেললে প্রশ্নের সম্মুখীন হতো। এখন এই শিশু পীরের নির্দেশে করেছে বলে সেই ভয় সরকারের মধ্যে নেই। এই শিশু পীরকে পেয়ে আন্তর্জাতিক কমিউনিটির ভয়, বিবেকের তাগিদ সব উবে গেছে সরকারের মন থেকে। এই শিশুটির জন্মদাতার পরিচয় নিয়ে আগে একটু রাখ ঢাক ছিল। ভারতের বহুল প্রচারিত পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়ে দিয়েছে এর পেছনে স্বয়ং ভারত। ভারতের পত্রিকা এই সাহসটি করলেও আমার দেশ ও দু-একটি পত্রিকা ছাড়া অন্য কোনো বাংলাদেশী পত্রিকা এই সাহসটি করেনি।
আমেরিকা প্রবাসী এক বন্ধু ই-মেইলে আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, কিছুদিন আগে মনে হতো সব পত্র-পত্রিকা সরকারের বিরুদ্ধে। এখন মনে হচ্ছে সবাই সরকারের পক্ষে। এটা একটা বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। কোন পত্রিকা দেশের কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে সমর্থন করবে, কিংবা কোন দলের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন হবে এটা অস্বাভাবিক কিছু না। প্রায় সব দেশেই এটা দেখা যায়। কিন্তু এদেশের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
প্রতিবেশী একটি দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের বড় রক্ষক হয়ে পড়েছে এদেশের মিডিয়ার বড় একটা অংশ। ইকনোমিস্ট আমাদের চোখ কিছুটা খুলে দিয়েছিল তাদের টাকা ও উপদেশের থলির ব্যাপারে। এ থলেগুলোর বড় প্রাপক সম্ভবত এদেশের মিডিয়া। পশ্চিমবঙ্গের মতো সচেতন সমাজে যেখানে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি পত্রিকা সেখানে আমাদের দেশে এতগুলো রং-বেরঙের পত্রিকা মনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করে। পাঠকদের চাহিদার চেয়ে এখানে অন্য কোনো চাহিদাটিই স্পষ্ট হয়ে পড়ে।
দেশের মানুষকে বোকা বানানোর নিমিত্তে এ পত্র-পত্রিকাগুলোকে তিনটি স্তরে রাখা হয়েছে। প্রথম স্তরে অন্ধ সমর্থক কিছু পত্রিকা। এ পত্রিকার লেখাগুলো অন্ধ সমর্থকদের জন্য উপাদেয়। অপেক্ষাকৃত বুদ্ধিমান সমর্থকদের জন্য রয়েছে দ্বিতীয় সারিতে রাখা কিছু পত্রিকা। এরা পছন্দের দলের বা সরকারের সমালোচনা করে। তবে বড় ধরনের বা স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে কি না সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখে। তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে তথাকথিত নিরপেক্ষ পত্রিকা। এদের অনেক অবকাশ দেয়া থাকে। আবদুল গাফফার চৌধুরীর মতো কাউকে দিয়ে মাঝে মাঝে গালি দেয়ানো হয়। এদের মূল মিশনটি হলো বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করা। প্রিয় দল বা সরকারের সমর্থন ও সমালোচনার মাত্রায় এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু একটি জায়গায় এদের মধ্যে চমত্কার মিল রয়েছে। এরা কখনোই তাদের প্রিয় দেশটির কর্মকাণ্ড বা স্বার্থের বিরুদ্ধে মুখ খুলে না।
কাজেই টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদকে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকাগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি। দেশের মানুষ জানেও না যে কী ভয়ঙ্কর পত্রিকাগুলোকে তাদের অজ্ঞতায় দেশের এলিট পত্রিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। ঝকমকে তকতকে ছুরিগুলো দিয়ে কীভাবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের গলায় ছুরি চালাচ্ছে। আমরা এখনও বাসায় বা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দৈনিক পত্রিকা রাখি নিজেকে উদার বা নিরপেক্ষ পরিচয় দেয়ার মানসে। পাছে লোকে কিছু বলে এই তাড়ায় তাড়িত দেশের শিক্ষিত সমাজের বড় অংশ। বিএনপির নেতাকর্মী বা সমর্থকদের মধ্যে এ তাড়াটি কেন যেন আরও বেশি করে কাজ করে। একটা জায়গা থেকে সচেতনভাবে এ হীনম্মন্যটুকু ঢুকিয়ে দেয়া হয়। সেই টেকনিকটি এখন কিছুটা অকার্যকর হয়ে পড়ছে দেখে এদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যেসব পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল এ ব্যাপারে মানুষের চোখ খুলে দিচ্ছে তাদের প্রতি চোখ লজ্জা ভুলে প্রকাশ্যে নেমেছেন।
এ স্বার্থের সবচেয়ে বড় হুমকি হলো মাত্র গুটিকয়েক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠান। শফিক রেহমানের হাত থেকে তার নিজের সৃষ্টি যায়যায়দিন পত্রিকাটি কেড়ে নেয়া হয়েছে। এখন সামনে পড়েছেন একমাত্র মাহমুদুর রহমান। তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের বিপরীতে মাহমুদুর রহমান যে জাগরণের ডাক দিয়েছেন তাকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মোকাবিলা করা এই শক্তিটির জন্য আসলেই কঠিন হয়ে পড়েছে।
মাহমুদুর রহমানের প্রতি প্রজন্ম চত্বরের গালি, সরকারের গালি এবং ইকবাল সোবহানদের গালি এখন একাকার হয়ে গেছে। সাগর-রুনির হত্যার বিচারকে সামনে নিয়ে বিভক্ত সাংবাদিক সমাজ এক হয়েছিলেন। সেই নেতাদের লিস্ট দেখে তখনই এ আন্দোলন কতটুকু সফল হবে তা স্পষ্ট হয়ে পড়েছিল। টক-দই ওয়ালার প্রতি তর্জন-গর্জন যতটুকু দেখা গেছে, তাতে দইয়ের টকত্বে কোনো হেরফের হয়নি। সাংবাদিকদের প্রফেশনাল হ্যাজার্ড আজ বহুগুণে বেড়ে গেছে। চোখে যা দেখা যাবে, হৃদয়ে যা অনুভব করা যাবে তা বলা যাবে না, লেখা যাবে না। দালালি করলে কোনো কথা নেই কিন্তু সাংবাদিকতা করতে গেলেই কুলাঙ্গার হয়ে পড়তে হবে। মনে হচ্ছে সেই কুলাঙ্গার হওয়ার দৃঢ প্রত্যয়ই গ্রহণ করেছেন সময়ের সাহসী সন্তান মাহমুদুর রহমান।
পৃথিবীর সব দেশে সাংস্কৃতিক জগত্, মিডিয়া জগত্ ও বুদ্ধিবৃত্তিক জগত্ থাকে সব সময় ন্যায়ের পক্ষে। মুক্ত চিন্তার পক্ষে, মানবতার পক্ষে। কিন্তু আমাদের দেশে ভিন্ন চিত্র। পদ্মা সেতুর মহাদুর্নীতি নিয়ে যখন মিডিয়ার ব্যস্ত থাকার কথা, তখন তারা লেগেছে এই শাহবাগ চত্বর নিয়ে। কাদের মোল্লার কথা স্মরণ হয়েছে তাতে দোষ নেই। কিন্তু আবুলদের কথা কেন মনে পড়ল না তা বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। যেখানে কচি বাচ্চাদের কচিকণ্ঠে জবাই করার কথা, ফাঁসির কথা তুলে দেয়া হয়েছে। হলমার্ক, ডেসটিনি, কুইক রেন্টাল প্রভৃতি চলে গেছে অনেক পেছনে। চরম ধর্মদ্রোহী শক্তি, দুর্নীতিবাজ অপশক্তি এবং সাংস্কৃতিক-মিডিয়া-বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের মধ্যে এক অশুভ আঁতাত দেখা গেছে এ শাহবাগ চত্বরে। এ চত্বর থেকে একবারও এসব মহাদুর্নীতির কথা উচ্চারিত হয়নি। সিংহের বাচ্চার মতো এই কথা উচ্চারণ করেছেন মাহমুদুর রহমান। এটাই তার বড় অপরাধ।
হাইকোর্টের এক বিচারপতি তাকে অভিহিত করেছিলেন ‘চান্স’ সম্পাদক হিসেবে। হাতে কিছু টাকা এবং মনে সামান্য শখ থাকলে যে কেউ সম্পাদক হওয়ার সুযোগ বা চান্সটি গ্রহণ করতে পারেন। তবে বিচারালয় থেকে শুরু করে সমাজের অন্যান্য আলয়কে এমনভাবে নাড়া দিতে পারেন না। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরী তাকে ‘কুলাঙ্গা’ র বলে গালি দিয়েছেন। সাংবাদিক নেতা হয়ে অন্য একজন পত্রিকার সম্পাদককে কুলাঙ্গার ডাকার মতো বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াপনা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। রিকশাওয়ালা, শ্রমিক এদের শব্দের ভাণ্ডার সীমিত। কারও প্রতি রেগে গেলে এদের মুখ থেকে সহজেই গালি বের হয়ে পড়ে। নিজের ক্রোধ ও হতাশা প্রকাশ করার জন্য এমনই শব্দ সঙ্কটে ভুগছেন ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মতো সাংবাদিক নেতা, ড. আনোয়ার হোসেন ও মুনতাসির মামুনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শিক্ষক।
মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তবুদ্ধির চেতনা ধারণ করাতে এরা সব সভ্যতা ও ভব্যতার ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন। নজরুলের একটি লেখায় পড়েছিলাম, মুয়াজ্জিন যে কেউ হতে পারেন কিন্তু ইমাম হন আল্লাহর ইচ্ছায়। নজরুলের সেই কথা ধরেই বলতে হয়, ইকবাল সোবহান যে কেউ হতে পারেন কিন্তু মাহমুদুর রহমান হন সম্ভবত আল্লাহর ইচ্ছায়। ইঁদুরের ছানা যে কেউ হতে পারে কিন্তু সিংহের বাচ্চা হয় আল্লাহর ইচ্ছায়। (দৈনিক আমার দেশ,২১ এপ্রিল ২০১৩ থেকে সংকলিত) minarrashid@yahoo.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন