রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

পহেলা নভেম্বর মাঠে নামছে হেফাজত : কওমি মাদরাসা সরকারি নিয়ন্ত্রণে আইন পাস হলে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে : আল্লামা শফী

 
হেফাজতের আমির ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমেদ শফী দেশের কওমি মাদরাসাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার তত্পরতা থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি গতকাল চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আলেমদের কথা না শুনে একগুঁয়েমি করে সরকার কওমি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ পাস করলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। আল্লামা শফী আরও বলেন, কওমি মাদরাসাগুলো যদি সরকারি নিয়ন্ত্রণে যায়, তবে দেশে ধর্মীয় শিক্ষা থাকবে না। এ জন্য সরকারকে বারবার বলছি, এ মাদরাসাগুলো পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া নিয়ম অনুযায়ী যেভাবে চালিয়ে আসছি সেভাবে রাখার জন্য।
এদিকে কওমি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ পাস থেকে সরকারের বিরত থাকা ও ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গতকালের সংবাদসম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর পক্ষে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামবাদী।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ নভেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ, ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম হাটহাজারী কলেজ ময়দানে মহাসমাবেশ এবং ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সব বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিকভাবে মহাসমাবেশ। এদিকে হেফাজত নেতারা সরকারকে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, এসব কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হলে হরতালসহ কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
হাটহাজারী ডাকবাংলোয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আজিজুল হক ইসলামবাদী সরকার এই আইনের মাধ্যমে নিজেদের মনোনীত কিছু লোককে চাপিয়ে দিয়ে বস্তুত কওমি মাদরাসাগুলো ওপর খবরদারি করতে চায়। সনদের তথাকথিত স্বীকৃতির নাম দিয়ে আলিমদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টিরও গভীর চক্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, আলিম-ওলামাকে ইমান-আকিদার প্রশ্নে যে কোনো আন্দোলন থেকে বিরত রেখে আত্মরক্ষামূলক ভূমিকায় ঠেলে দেয়ার জন্য এটি সরকারের আরেকটি নতুন চাল। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলিম, কওমি মাদরাসা বোর্ডের দায়িত্বশীল ও বিভিন্ন মাদরাসার প্রিন্সিপালরা সরকারের এই হঠাকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার ও অতি উত্সাহী কিছু মিডিয়া কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ ছাড়া একের পর এক মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত সংবাদ পরিবেশন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। লালখান বাজার মাদরাসায় ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনাকে ঘিরে হাটহাজারী মাদরাসাসহ সারা দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে জঙ্গি ও বোমাবাজির সঙ্গে জড়িত প্রমাণ করার জন্য ভয়াবহ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশের কোনো কওমি মাদরাসায় কোনো ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ নেই। এসব মাদরাসায় সত্, আদর্শবান ও খোদাভীরু আলিম তৈরি হয়, যারা সারা জীবন সমাজ, সমাজের মানুষ ও মানবতার সেবায় নিজেদের জীবন উত্সর্গ করে যায়। দেশের আইনবিরোধী অনৈতিক কাজে তারা কখনও সম্পৃক্ত হয়নি।
দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে বহু দিন থেকে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ বিধৃত মাদরাসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে সরকার ১৫ এপ্রিল ২০১২ সালে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কমিশন নামে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) চেয়ারম্যান, উপমহাদেশের বিখ্যাত কওমি মাদরাসা দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহতামিম, আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে। সরকারের ছলচাতুরী বুঝতে পেরে আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম এই কমিশন প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু সরকার তার আজ্ঞাবহ মাওলানা ফরিদুদ্দিন মাসউদ ও মাওলানা রুহুল আমিনের মাধ্যমে কওমি মাদরাসা ও ওলামায়ে কেরামদের সরকারের পক্ষে আনতে ব্যর্থ হয়ে কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৩-এর খসড়া তৈরি করে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে যে, গত ৮ অক্টোবর একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করে খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করা হয়। এরপর অতি দ্রুত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া হয়। গত ২০ অক্টোবর সকালে তা প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়। এখন শুধু মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলেই তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে।
আমরা মনে করি, সরকারের ঘাড়ে চেপে-বসা ইসলামবিদ্বেষী একটি চক্রের প্ররোচনায় নানা ছলছুতোয় কওমি মাদরাসাগুলো কব্জা করার অশুভ পথে পা বাড়াতে উদ্যত হয়েছে সরকার। কেননা একদিকে তারা কওমি মাদরাসার দরদি সেজে তাদের মতো করে কওমি সনদের স্বীকৃতির প্রলোভন দেখাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের সব কওমি মাদরাসা, আলিমসমাজ ও ধর্মপ্রাণ মানুষের অবিসংবাদিত আধ্যাত্মিক নেতা, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। আমরা সরকারকে আবারও সতর্ক করতে চাই—কওমি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আইনের নামে হাজার হাজার কওমি মাদরাসার ওপর ছড়ি ঘোরানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। নইলে সারা দেশের আলিম সমাজ ও মাদরাসা-শিক্ষকরা সর্বস্তরের মুসলমানদের সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের এই অশুভ পদক্ষেপ রুখে দাঁড়াবে। গড়ে তুলবে দুর্বার গণআন্দোলন। কওমি মাদরাসার অস্তিত্ব ও স্বকীয়তা রক্ষার প্রয়োজনে কঠিনতর কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে।
বিগত ২৫ সেপ্টেম্বর আমরা সারা দেশে স্মারকলিপি দিয়ে সরকারকে কওমি মাদরাসার স্বার্থবিরোধী এই আইন বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে উপস্থাপিত আমাদের দাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে সরকার তার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথেই অগ্রসর হচ্ছে। আমরা মনে করি এ পথ থেকে সরে না এলে সরকারকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
আজিজুল হক ইসলামবাদী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, দেশে হাজার হাজার কওমি মাদরাসার লাখ লাখ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তাওহিদি জনতা এই আইন কখনো বাস্তবায়ন হতে দেবে না ইনশাআল্লাহ।
বিগত ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিদ্যুিবচ্ছিন্ন করে, রাতের অন্ধাকারে নবীপ্রেমিক জনতার ওপর যৌথবাহিনী দিয়ে এক লাখ পঞ্চান্ন হাজার রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে। লাখ লাখ নিরীহ মুসলমানদের ওপর ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এ ঘটনা অসংখ্য ওলামা-পীর-মাশায়েখকে শহীদ করা হয়েছে। বহু মানুষ চিরদিনের জন্য পঙ্গু ও অন্ধ হয়ে গেছেন। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরকারদলীয় ক্যাডার, নাস্তিক-মুরতাদদের দোসররা নৃশংস হামলা চালালো অথচ উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে সারা দেশে অর্ধশতাধিক মামলা হয়রানি করা হচ্ছে।
বায়তুল মোকাররম এলাকায় সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা সেদিন পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। এই সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় দায়িত্বশীল হেফাজতের বিরুদ্ধে প্রতিদিন অব্যাহত মিথ্যাচার করে চলেছেন। আমীরে হেফাজত, শায়খুল ইসলাম, আলামা শাহ্ আহমদ শফীর বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদসহ সর্বত্র কুত্সা রটিয়ে আলিমসমাজকে জাতির সামনে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের প্রখ্যাত আলিম, সাবেক মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ও মুফতি হারুন ইজহারসহ অসংখ্য আলিম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও ধর্মপ্রাণ তাওহিদি জনতাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেফতারদের নিঃশর্তমুক্তি এবং দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদসম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী, নায়েবে আমির মাওলানা শামশুল আলম, কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির হাফেজ তাজুল ইসলাম, মাওলানা লোকমান, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মঈনুদ্দী রুহী, মাওলানা সেলিম উল্লাহ, হাটহাজারী উপজেলা হেফাজতের আমির মাওলানা মাহমুদুল হাসান, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, নির্বাহী সদস্য মাওলানা মুফতি হাবিবুল রহমান কাসেমী, উত্তর জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস, চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মোজাম্মেল হক, নির্বাহী সদস্যে মাওলানা আবদুল্লাহ, হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাকিরিয়া নোমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সফিউল্লাহ, আহসান উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গির মেহেদী, মহানগর নেতা মাওলানা ফয়সল তাজ, মাওলানা ইব্রাহিম সিকদার, মাওলানা আনাস আহমেদ উল্লাহ প্রমুখ। Daily Amerdesh

নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই

নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই

দুই নেত্রীর ফোনালাপ




রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত ফোনালাপ হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ফোন করে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে আগামীকাল গণভবনে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ও নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে হরতাল প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানান। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এ আমন্ত্রণকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে বলেন, হরতাল কর্মসূচির কারণে ওইদিন তিনি গণভবনে যেতে পারছেন না। তবে ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যার পর হরতাল শেষে যে কোনো সময় আলোচনার জন্য ডাকলে তিনি সাড়া দেবেন। হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান সম্পর্কে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে ফোনে জানান, হরতাল কর্মসূচি ১৮ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত। জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে তার পক্ষে এ মুহূর্তে হরতাল প্রত্যাহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রধনমন্ত্রীর এই ফোন এক দিন আগে পেলেও জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেত।
প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার মধ্যে ৩৭ মিনিট ধরে এই ফোনালাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যা ৬টা ২১ মিনিটে এই ফোন করেন। এই ফোনালাপ সম্পর্কে দু’পক্ষই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ প্রেস ব্রিফিং করে বলেন, আজকের দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার মধ্যে ফোনালাপ বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ফ্রিফিংয়ে বলেন, দুই নেত্রীর মধ্যে এই ফোনালাপ একটি শুভ সূচনা।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৯৫ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনার জন্য তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে ফোন করেছিলেন।
সৈয়দ আশরাফ জানালেন, যে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত প্রধানমন্ত্রী, প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেননি খালেদা জিয়া
বিরোধীদলীয় নেতাকে প্রধানমন্ত্রীর ফোন করার বিষয়টি জানিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন,আজকের (গতকাল) দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ (গতকাল) বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন করার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়াকে ফোন করেছেন। ফোনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি যে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। বিরোধী দলের নেতা প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেননি।
আশরাফ বলেন, তাদের মধ্যে ৩৭ মিনিট কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাকে গণভবনের আসা ও নৈশভোজের জন্য দাওয়াত দিয়েছেন। বিরোধী দলের নেতা তাকে জানিয়েছেন, জোটের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের জানা মতে, তাদের মধ্যে নেতিবাচক কথা হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, বিরোধী দলের নেতা আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন, ২৮ তারিখ গণভবনে আসবেন। সেখানেই আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে। আশা করি এখন আর হরতালের প্রয়োজন নেই। যেখানে আলোচনা আছে, সেখানে হরতালের প্রয়োজন নেই।
বিরোধী দলের সঙ্গে যে কোনো ইস্যুতে আওয়ামী লীগ আলোচনায় রাজি আছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে কোনো বিষয়ে আলোচনার দুয়ার খোলা আছে। জাতি আশা করেছিল, দুই নেত্রী কথা বলবেন এবং সঙ্কটের নিরসন হবে।
আলোচনা হলে তার বিষয়বস্তু কী হবে জানতে চাইলে আশরাফ বলেন, আলোচনা শুরু হবে। দুই নেত্রী আলোচনা শুরু করবেন। আমরা থাকতেও (আলোচনায়) পারি, নাও পারি। তারা ঠিক করবেন, তাদের সূচনা আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু বিএনপি, না ১৮ দলের জোটকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ‘ওয়ান টু ওয়ান’ আলোচনা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধী দলের নেতা যতজন নিয়ে আসতে চান, আসতে পারেন। তিনি কতজন নিয়ে আসবেন, প্রধানমন্ত্রী তা আগে জানাতে বলেছেন।

দুঃখ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তবে আশাবাদী
টেলিফোন করে হরতাল প্রত্যাহার ও সংলাপের আমন্ত্রণ জানানোর পরও হরতাল প্রত্যাহার না করা ও হরতাল কর্মসূচি শেষে সংলাপে আসার বিএনপির সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুঃখ পেয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি বলেন, তাদের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী দুঃখ পেয়েছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইকবাল সোবহান বলেন, বিএনপির এমন সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা তাদের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছি। তাহলে কেন তারা হরতাল প্রত্যাহার করে সংলাপে আসবেন না?
সংলাপের প্রস্তাব পাওয়ার পর হরতাল প্রত্যাহার না করে বিরোধীদলীয় নেতা স্ববিরোধী অবস্থান নিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। তারপরও তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা নৈশভোজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন, হরতাল প্রত্যাহার করবেন।

টেলিসংলাপে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একাংশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল দুপুরে রেড টেলিফোনে বারবার ফোন করে বিরোধীদলীয় নেতাকে পাননি বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার বাড়ির টেলিফোনটি বিকল হয়ে আছে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর এডিসি মোবাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন। সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা ওই এডিসির মোবাইল ফোনেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম। আমি রেড টেলিফোন থেকে নিজের হাতে ফোন করেছি। বারবার রিং হয়েছে। আমি দুঃখিত যে আপনি ধরতে পারেননি। জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা রেড টেলিফোন দীর্ঘদিন ধরে ডেড থাকার কথা জানালে প্রধানমন্ত্রী এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, (টেলিফোন) ডেড, নাকি ডেড করে রাখা হয়েছে, বলতে পারছি না। আগামীকাল (আজ) আমি দেখব।
টেলিফোনে বিরোধীদলীয় নেতাকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, ২৮ তারিখ (আগামীকাল) রাতে খাওয়ার জন্য আপনাকে দাওয়াত করছি। যতজন খুশি নিয়ে আসতে পারেন। আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি আগামী নির্বাচন সম্পর্কে গণভবনে আসার জন্য।
নির্বাচনের আগে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আমি এরই মধ্যে অন্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি, তা আপনি জানেন।
এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা তাদের হরতালের প্রসঙ্গ তুললে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনি হরতাল প্রত্যাহার করে নেন। দেশ ও জনগণের স্বার্থে হরতাল প্রত্যাহার করেন।
কথা বলার সময় শেখ হাসিনার ডান দিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, বাম দিকে তোফায়েল আহমেদ, এইচটি ইমাম বসা ছিলেন। এছাড়া অন্যদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান ছিলেন।
খালেদা জিয়া বললেন, এখন আর হরতাল প্রত্যাহার সম্ভব নয় নীতিগতভাবে দাবি মেনে নিলে কর্মসূচি স্থগিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার ফোনালাপে হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বানের পর বিএনপি জানিয়েছে, হরতাল বহাল থাকবে। নির্দলীয় সরকারের ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হরতাল কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনা শুরুর আহ্বান জানালে বিএনপি তাতে সাড়া দেবে। যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিতে প্রস্তুত বিরোধীদলীয় নেতা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতার ৩৭ মিনিট টেলিফোন সংলাপের পর তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বিরোধীদলীয় নেতার বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের মোবাইল টেলিফোনে গণভবন থেকে কল এলে তা বিরোধীদলীয় নেতাকে দেয়া হয়। ওই কলটি ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতাকে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সোমবার সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা প্র্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন, তিনি যদি নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে—এ বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হন, তাহলে ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি আমি স্থগিত করব।
প্রধানমন্ত্রীর হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, হরতালের কর্মসূচি ১৮ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত। জোট নেতারা পুলিশে তাড়া খেয়ে বর্তমানে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করছেন। এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তাদের একত্রিত করে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা এও বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি এই টেলিফোনটি গতকাল (শুক্রবার) করতেন, তাহলে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেত। এখন আমার একার পক্ষে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ১৮ দলীয় জোট সারাদেশে আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লাগাতার ৬০ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গত শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় খালেদা জিয়া এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মারুফ কামাল খান জানান, গুলশানে নিজ বাসভবনে অবস্থানরত বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে প্রায় ৩৭ মিনিট কথা হয় প্রধানমন্ত্রীর।
২৮ অক্টোবর গণভবনের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, ্ওইদিন হরতাল কর্মসূচি থাকবে। সে জন্য তিনি গণভবনে যেতে পারবেন না। ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যার পর যে কোনো সময় আলোচনার জন্য আপনি (শেখ হাসিনা) ডাকলে তাতে আমি সাড়া দেব।
তিনি বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আপনি সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছেন। আমি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি প্রস্তাব দিয়েছি। এই দুটি প্রস্তাব সমন্বয় করে সমঝোতা হতে পারে বলে আমি মনে করি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোন সংলাপের সময়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী অতীত নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার কাছে অনেক অভিযোগ করেছেন। জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, আমিও এমন অনেক কথা বলতে পারি। তাই আসুন অতীতের তিক্ততা বাদ দিয়ে জাতির আজকের সঙ্কট নিরসনের জন্য একসঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছি। আমরা অতীতকে ভুলে নতুন ধারার রাজনীতিতে যেতে চাই। আমরা এই ধারার ‘ফ্রেস স্ট্রার্ট’ (নতুন করে সূচনা) করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সর্বদলীয় প্রস্তাব সম্পর্কে বিরোধীদলীয় নেতা কী বলেছেন জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা যে সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছি, তা মেনে নিন। জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, আপনি সর্বদলীয় যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা জাতির কাছে গ্রহণ যোগ্য নয়। তারা মেনে নেয়নি। আমরা একদলীয়, দ্বিদলীয় ও বহুদলীয় ব্যবস্থা চাই না। এতে নানা মতের লোক নিয়ে ঝামেলা হবে। সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।
লাল টেলিফোন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী তুলে প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লাল টেলিফোন যোগাযোগ করে আমি পাইনি। বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, এই লাল টেলিফোনটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। বারবার অভিযোগ করলেও তা সচল করা হয়নি। আজ (শনিবার) সংবাদকর্মীদের ডেকে তা দেখানো হয়েছে। এই টেলিফোনটি ডেড (অচল), কোনো সাড়া-শব্দ নেই।
খালেদা জিয়ার বাসভবন সূত্রে জানা গেছে, সেনানিবাসের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর বিরোধীদলীয় নেতার রেড ফোন নষ্ট রয়েছে। এরপর এই ফোনে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, আপনি যদি সত্যিই আন্তরিকভাবে আমার সঙ্গে দিনে বা গতকাল রাতে কথা বলতে চাইতেন, তাহলে আজকের যুগে অনেক মাধ্যম আছে, তা দিয়ে করতে পারতেন। যে মাধ্যম দিয়ে (শেষ পর্যন্ত) আপনার স্টাফরা আমার স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আপনি সারা দিন এক লাল টেলিফোনে চেষ্টা করেছেন, তা ঠিক হয়নি।
বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, টেলিফোন বিভাগের একজন কর্মচারী আমার লাল টেলিফোন সচল আছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়ে এক ধরনের রাজনৈতিক প্রচারণার চেষ্টা করেছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, এটা আমি দেখতে চাই।
টেলিফোনের আলাপের সময় বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক বিভিন্ন সময়ের আন্দোলনে আমরা অতীতে একসঙ্গে কাজ করেছি। আপনার (শেখ হাসিনা) বাসায় গিয়েছি। আজ জাতির সঙ্কট মুহূর্তে জাতীয় ইস্যুতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
প্রেস সচিব দুই নেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনের আলাপকে শুভ সূচনা অভিহিত করে বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, আলোচনার যে সূচনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা করেন বিরোধীদলীয় নেতা।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে দলের সহ-সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম, সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কথা হলো চার বছর পর
গতকালের আগে দুই নেত্রীর দেখা বা যোগাযোগ হয়েছে চার বছর হলো। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে সেনাকুঞ্জের এক অনুষ্ঠানে দুই নেত্রীর সাক্ষাত্ ও আলাপ হয়েছিল। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক আমলের সাবজেলের স্মৃতি বিনিময়ও হয় তাদের মধ্যে।
একই বছরের মে মাসে ড. ওয়াজেদ আলীর মৃত্যুর পর শেখ হাসিনার বাসায় ছুটে যান খালেদা জিয়া। সেখানে শেখ হাসিনাকে সমবেদনা জানানা বিরোধীদলীয় নেতা। সেখানে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।
তারপর চার বছর বন্ধ ছিল মুখ দেখাদেখি। ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর সেনাকুঞ্জে এবং এ বছর ২১ মার্চ প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে বঙ্গভবনে দু’জন উপস্থিত হলেও তাদের মুখ দেখাদেখি হয়নি।

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩